স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করে অভিনব পদ্ধতিতে প্রশ্ন জালিয়াতির অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজন প্রশ্নপত্র জালিয়াত চক্রের সদস্য। অন্যজন এই চক্রের সহযোগিতা নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার প্রশ্ন জালিয়াতি করেন তাঁরা।
আটক হওয়া জালিয়াত চক্রের সদস্যের নাম মো. কামরুল ইসলাম। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষার্থী বলে জানান। অন্যজন মো. ইমরান হোসেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হতে জালিয়াত চক্রের সহযোগিতায় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
গতকাল বিকেল চারটায় আটক হওয়া দুজনকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় তাঁদের কীভাবে আটক করা হয় এবং কী প্রক্রিয়ায় তাঁরা প্রশ্ন জালিয়াতি করেন, তা তুলে ধরেন পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঝুপড়ি থেকে কামরুল ইসলামকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁর কাছে প্রশ্ন জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত চারটি স্মার্ট ওয়াচ উদ্ধার করা হয়। আর ভর্তি পরীক্ষার হল থেকে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার সময় হাতেনাতে আটক করা হয় মো. ইমরান হোসেনকে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আটক করা হবে।
পুলিশ সুপার এ সময় জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত ঘড়ি দেখিয়ে বলেন, দেখতে হাতঘড়ির মতো হলেও এটি ঘড়ির চেয়ে বেশি কিছু। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এই ঘড়ির নাম স্মার্ট ওয়াচ। এর মধ্যে একটি স্মার্ট ওয়াচ ছিল ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীর হাতে। আরেকটি ছিল জালিয়াত চক্রের সদস্যর হাতে। এ ছাড়া ক্ষুদ্রাকৃতির মুঠোফোন, ব্লুটুথ ইয়ার ফোনও জালিয়াতির কাজে ব্যবহার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘স্মার্ট ওয়াচের মাধ্যমে ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী প্রশ্ন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার ছবি তুলে দ্রুত পরীক্ষার হলের বাইরে অবস্থান করা চক্রের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। ওই স্মার্ট ওয়াচের মাধ্যমে আরেকটি স্মার্ট ওয়াচে ছবি পাঠানো যায়। পরে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা দ্রুত প্রশ্নের উত্তর বের করে নেয়। এরপর সঠিক উত্তরের তালিকা তৈরি করে মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে পরীক্ষার হলে অবস্থান করা পরীক্ষার্থীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। এভাবে চক্রটি শুধু অর্থের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নয়, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায়ও প্রশ্ন জালিয়াতি করে বলে জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে।’
0 coment rios:
আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।