সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ১১Md Abdul Kaiyum
রিমাঃ এই যে (খালিদ কে উদ্দেশ্য করে)
খালিদঃ জী.. আপনার কিছু লাগবে.??
রিমাঃ হুম. যদি রুমে আসতেন তাহলে বলতাম।
খালিদঃ আপনি যান আমি আসতাছি।
তারপর রিমা আগে রুমে চলে যায় আর খালিদ একটু পরে রুমে যায়
খালিদঃ আপনার কিছু লাগবে.??
রিমাঃ হুম(মাথা নেড়ে)
খালিদঃ কি আনতে হবে?
রিমাঃ( মাথা নিচের দিকে দিয়ে) আমার প্যাড (ন্যাপকিন) শেষ হয়ে গেছে। আসার সময় যদি আমার জন্য প্যাড আনতেন??
খালিদঃ ইসস... আমার ই তো ভুল হয়েছে। আপনার কখন কি প্রয়োজন তা তো আমার ই আপনার থেকে জানার দরকার ছিল। ভুল হয়ে গেছে।
রিমাঃ সমস্যা নাই।সারাদিন অনেক কাজ করেছেন ভুলে যাওয়ার ই কথা। রাতে আসার সময় মনে করে নিয়ে আসলেই হবে।
খালিদঃ ইনশাআল্লাহ. এটা আপনাদের দায়েমী সুন্নত। এই কাজে অলসতা করা আমার মোটেও উচিৎ হবে না।তাহলে এখন আমি আসি।
রিমাঃ জী. আসসালামু আইলাইকুম
খালিদঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম
খালিদ ঘর থেকে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। রিমা তার জরুরতের উদ্দেশ্যে টয়লেটে যায়। রিমা টয়লেটে ডুকার সময় ভুলে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করে তা আয়েশা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় লক্ষ করে। পরে রিমা যখন টয়লেটের জরুরত সেরে নিজের রুমে বসে বসে খালিদের পড়ার টেবিলের বই গুলো দেখছিলো।
তখন রুমের বাহির থেকে আয়েশা সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেয়। রিমা সালামের জওয়াব দিয়ে আয়েশা কে ঘরে আসতে বলে।
তখন রুমের বাহির থেকে আয়েশা সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেয়। রিমা সালামের জওয়াব দিয়ে আয়েশা কে ঘরে আসতে বলে।
আয়েশাঃ ভাবি... একটা কথা বলতাম যদি কিছু মনে না করতেন।
রিমাঃ হ্যা বলুন. কি বলবেন আফা.?
আয়েশাঃ ভাবি আমি খেয়াল করছিলাম আপনি টয়লেটে প্রবেশ করার সময় মনে হয় ভুলে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করছেন। আসলে টয়লেটে প্রবেশ করতে বাম পা আগে দিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত।
রিমাঃ আসলে আফা আমিও জানতাম যে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত। কিন্তু অবহেলার কারনে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করে ফেলি। সরি আফা...
আয়েশা:আরে ভাবি আপনি আমায় সরি বলছেন কেন?? আপনি বরং ইস্তেগফার পড়ে মাওলার কাছে প্রতিজ্ঞা করুন এমন ভুল আর করবেন না। আজ থেকে সুন্নতি তরিকায় সব কাজ করবেন।
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ..
খালিদঃ ঠিক আছে ভাবি। আমি গিয়ে একট বিশ্রাম নিই।
রিমাঃ ঠিক আছে ভাবি. আসসালামু আলআলাইকুম
আয়েশা সালামের জওয়াব দিয়ে তার রুমে বিশ্রামের। জন্য চলে যায়।রিমা ও বিশ্রামের জন্য বিচানায় শুয়ে পড়ে।
কিছুক্ষণ পর খালিদ প্যাড নিয়ে রুমে ফিরে আসে। ততক্ষণে রিমার ঘুম চলে আসে। খালিদ প্যাড টেবিলের উপর রেখে আবার বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। পথে তার বড় ভাই কাসিমের সাথে দেখা। কাসিম বাড়ি আসতাছে।
খালিদঃ আসসালামু আলাইকুম.ভাইয়া কেমন আছেন।
কাসিমঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম. আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো তুই কেমন আছিস।
খালিদঃ আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো. আসতে কোন সমস্যা হয় নাই তো ভাই।
কাসিমঃ না.. আলহামদুলিল্লাহ্ কোন সমস্যা হয় নি। কই যাস.??
খালিদঃ ভাইয়া এখনো কিছু কিছু বাজার করার বাকি আছে. বাজার করতে যাই।
কাসিমঃ ও. শোন আমি গরুর গোস্ত ও মোরগের দোকানের সাথে কথা বলে আসছি। গরুর গোস্ত তারা টুকরো টুকরো করে সকালে পাঠিয়ে দিবে. আর মোরগ ও সকালে ফজরের পর পর পাঠিয়ে দিবে বলছে.
খালিদঃ ঠিক আছে ভাই. আপনি বিশ্রাম নিন. আমি আসি। রাতে কথা হবে ইনশাআল্লাহ।
কাসিমঃ আমিও যাই তোর সাথে.??
খালিদঃ না ভাই. অনেক জার্নি করে আসছেন. আপনি বরং বিশ্রাম নেন।তাছাড়া বড় ভাবি হয়তো আপনার জন্য অপেক্ষা করতাছে।
কাসিমঃ আচ্ছা আমি যাই তাহলে. কোন প্রয়োজন হলে ফোন দিস।
খালিদঃ ঠিক আছে ভাই. আসসালামু আইলাইকুম
কাসিম সালামের জওয়াব দিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়. বাড়িতে পৌছে সালাম দিতেই তারাতরি বড়ভাবি এসে দরজার খুলে দেয় এবং সালামের জবাব দেয়।
বড়ভাবি তার ওড়নার আচল দিয়ে কাসিমের মুখ মুছে দিতে দিতে বলেন
বড়ভাবীঃ কেমন আছেন. পথে কোন সমস্যা হয় নাই তো??
কাসিমঃ আলহামদুলিল্লাহ্ ভাল আর কোন সমস্যাও হয় নি।তোমার কি অবস্থা.?
বড়ভাবীঃ আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো.
ততক্ষণে খালিদের মা ও বোন আয়েশা দরজায় হাজির হয়।
খালিদের মাঃ কিরে মা.ছেলেটাকে ঘরে ডুকতে দে...?নাকি সব কথা দরজায় দাড়িয়েই বলবি.??(হাসি মুখে)
কাসিমঃ আসসালামু আইলাইকুম মা. কেমন আছেন।বাবা কেমন আছে।কিরে কেমন আছিস তোর হযরতের কি অবস্থা? (আয়েশাকে উদ্দেশ্য করে)
খালিদের মাঃ আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো. তোর বাবা ও এখন অনেক সুস্থ।
আয়েশাঃ আছি আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো. উনিও ভালো আছে। কাল সকালে আসবে ইনশাআল্লাহ।
খালিদের মাঃ আচ্ছা হয়ছে হয়ছে সব কথা পরে হবে তুই ঘরে যা বাবা। একটু বিশ্রাম নে।
তারপর বড়ভাবি কাসিমের হাত থেকে ব্যাগ নিজের হাতে নিয়ে
বড়ভাবীঃ চলুন
বড়ভাবীঃ চলুন
কাসিমঃ ওয়েট ওয়েট এই ধর এটা তোর আর এটা খালিদের বউকে দিবি( আয়েশাকে উদ্দেশ্যে করে)
আয়েশাঃ জাযাকুমুল্লাহ ভাইয়া..
আয়েশা খালিদ হাত থেকে চকলেট গুলো নিয়ে চলে যায়।
কাসিমঃ এই নিন মা.. এটা আপনার আর আব্বার জন্য।
খালিদের হাত থেকে বইটা নিয়ে খালিদের মা নিজের রুমে চলে যায়।
খালিদের হাত থেকে বইটা নিয়ে খালিদের মা নিজের রুমে চলে যায়।
কাসিমঃ আর আপনার টা রুমে গিয়ে দিবো চলুন।
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
শিক্ষা
★স্ত্রীর প্রয়োজনীয় জিনিষ কি কি লাগতে পারে তা সব সময় মাথায় রাখার চেষ্টা করুন।আপনার ছোটো ছোট কেয়ার গুলোই স্ত্রীর অনেক কাজে লাগবে।
★ স্ত্রীর প্রয়োজনীয় জিনিষ গুলো আনতে কখনো অবহেলা করবেন না।
★হায়েজরত অবস্থায় পট্টি ব্যবহার করা দায়েমী সুন্নত।
★বাড়ি আসার সময় ঘরের মহিলাদের জন্য কিছু সাথে করে নিয়ে আসা সুন্নত।আপনি যখন তাদের জন্য কিছু নিয়ে আসবেন তখন আপনার প্রতি তাদের অনেক ভালোবাসা জন্মাবে।
★ টয়লেট /ইস্তিঞ্জার এরএর সুন্নাতসমূহ
১. মাথা ঢেকে রাখা। (বাইহাকী শরীফ, হাঃ নং ৪৫৬)
২. জুতা-সেন্ডেল পরিধান করে যাওয়া। (তাবাকাতে ইবনে সাআদ’, ১৮৫/ কানযুল উম্মাল, হাঃ নং-১৭৮৭২)
৩. পায়খানায় প্রবেশের পূর্বে এই দু‘আ পড়া : بسم الله اللهم انى اعوذبك من الخبث والخبائث (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাঃ নং ৫)
৪. দু‘আ পড়ার পর আগে বাম পা ঢুকানো। (আবু দাউদ, হাঃ নং ৩২)
৫. কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ দিয়ে না বসা। (বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৪৪)
৬. যথাসম্ভব বসার নিকটবর্তী হয়ে ছতর খোলা এবং বসা অবস্থায় পেশাব ও পায়খানা করা, দাঁড়িয়ে পেশাব না করা। (নাসায়ী শরীফ, হাঃ নং ২৯/ তিরমিযী শরীফ, হাঃ নং ১৪)
৭. পেশাব ও নাপাক পানির ছিঁটা হতে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বেঁচে থাকা। (বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২১৮)
৮. পানি খরচ করার পূর্বে ঢিলা-কুলুখ (বা টয়লেট পেপার) ব্যবহার করা। (বাইহাকী, হাঃ নং ৫১৭)
৯. ঢিলা ও পানি খরচ করার সময় বাম হাত ব্যবহার করা। (বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৫৪)
১০. পেশাবের ফোঁটা আসা বন্ধ হওয়ার জন্য আড়ালে সামান্য চলাফেরা করা। (ইবনে মাজাহ শরীফ, হাঃ নং ৩২৬)
১১. যেখানে পেশাব ও পায়খানার জন্য নির্ধারিত কোন জায়গা নেই, সেখানে এমনভাবে বসা যেন ছতর নজরে না পড়ে। (আবু দাউদ হাঃ নং ২)
১২. পেশাবের জন্য নরম বা এমন স্থান তালাশ করা যেখান থেকে পেশাবের ছিঁটা শরীরে বা কাপড়ে না লাগে। (আবু দাউদ, হাঃ নং ৩)
১৩. ঢিলা-কুলুখ ব্যবহারের পর পানি ব্যবহার করা। (সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাঃ নং ৮৩)
১৪. ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (আবু দাউদ, হাঃ নং ৩২)
১৫. বাইরে এসে এই দু‘আ পড়া : غفرانك الحمد لله الذى اذهب عنى الاذى وعافانى (আবু দাউদ, হাঃ নং ৩০ : ইবনে মাজাহ, হাঃ নং ৩০১)
tag
0 coment rios:
আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।