সুন্নত জিন্দার মিশন. পর্ব ৩৪Md Abdul Kaiyum
ডাক্তারঃদেখুন.. আমি এই রকম রিপোর্ট আগে কখনো দেখি নাই।তাই আমি আমার শিক্ষক কে এই রিপোর্ট টি দেখালাম।আমি শিক্ষক ও এই রকম রিপোর্টের মুখামুখি হয় নি।তবে উনি রিপোর্ট দেখে আচঁ করতে পাচ্ছেন যে বাচ্চার অবস্থা ভালো না। বাচ্চা বিকৃত অবস্থায় আছে।এবং কি আমাদের ধারনা বাচ্চার হাত এবং পা ও বিকৃত এমন কি বাচ্চার হাত পা দুইয়ের ও অধিক।এই রকম বাচ্চা বড় হতে থাকলে মায়ের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।আমাকে স্যার পরামর্শ দিয়েছেন অতি তারাতারি অপারেশন করে এটাকে নষ্ট করে ফেলতে।না হয় মায়ের মৃত্যু হতে পারে।
ডাক্তারের কথা শুনে রিমার আর খাদিজার মুখ যেন বন্ধ হয়ে যায়।দুইজনেই যেন বোবা হয়ে যায়।রিমা চিৎকার করতে গিয়ে যেন পারছে না।চোখ দিয়ে অনবরত পানি বের হয়ে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর
ডাক্তার :দেখুন ম্যামের সাথে পরামর্শ করে জানতে পারলাম।বাচ্চার বয়স এমনিতেই বেশি হয়ে গেছে।আগামি ৮-১০ দিনের ভিতর যদি কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করা হয় তাহলে পরে কিন্তু আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না।
রিমা খাদিজাকে ইশারা দেয় উঠে যাওয়ার জন্য।
খাদিজাঃ আচ্ছা ডাক্তার... আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করবো ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।
তারপর তারা চেম্বার থেকে বের হয়।
খালিদ : কি খবর।ডাক্তার কি বলছে..? এই আপনি কান্না করছেন কেন.???
রিমা কোন কথা বলছে না। শুধু কান্না করছে।
খালিদ :আপনি বলুন তো...?(খাদিজা) কি হয়েছে.? ডাক্তার কি বলছে। এই আপনার চোখেও তো পানি।প্লিজ বলুন না ডাক্তার কি বলছে.?
খাদিজা :বাসায় চলুন।এখানে কিচ্ছু ভালো লাগছেন।
তারপর খালিদ আর কথা না বাড়িয়ে হস্পিতাল থেকে বেড়িয়ে আসে।সারা রাস্তায় কেউ কারো সাথে কথা বলিনি।রিমা আর খাদিজার চোখ থেকে অনুবরত পানি পড়তেই আছে।পানির কারনে তাদের নিকাব অনেকটাই ভিজে গেছে।
খালিদ বুঝতে পারে খারাপ কোন কিছু হয়েছে।তাই সে খুব চিন্তিত। বার বার প্রশ্ন করতে গিয়েও নিজেকে কন্ট্রোল করে রেখেছে।
বাড়ি আসা মাত্রই রিমা তারাতারি গাড়ি থেকে নেমে হাটা শুরু করে।খালিদের বাবা আর মা তাদের জন্য দরজায় অপেক্ষারত ছিল।
রিমা আসা মাত্রাই তারা দরজা খুলে দেয়।রিমা কোন রকম কষ্টে সালাম একটা দেয়।শাশুড়িকে কোন প্রশ্ন করার আর সুযোগ দেয় নাই।সোজা নিজের রুমে হেটে চলে যায়।রুমে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা লক করে দেয়।
রিমার এই রকম আচরণের সম্মুখীন কখনোই খালিদের মাকে পড়তে হয় নি।উনি বুঝতে পেরেছেন কিছু একটা হয়েছে।
তারপর খালিদ আর খাদিজা রুমে প্রবেশ করে।কিছুক্ষণ পর সবার পীড়াপীড়িতে খাদিজা সবাইকে বিস্তারিত সব কিছু বলে।
খাদিজার কথা শুনে তো সবার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল।সবাই থ (চুপ) হয়ে যায়।
খালিদ আরর খালিদের মায়ের চোখ বেয়ে পানি পড়া শুরু হয়।
দীর্ঘক্ষণ চুপ থাকার পর খালিদ উঠে নিজের রুমের সামনে যায়।কিন্তু রুম তো ভিতর থেকে লক করা।
সালাম দিয়ে কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করার পর রিমা দরজা খুলে।
সালাম দিয়ে কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করার পর রিমা দরজা খুলে।
কয়েক সেকেন্ড একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকার পর রিমা গিয়ে খালিদ কে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে।খালিদ ও রিমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে।
এভাবে অনেক্ষন কান্নার পর মাগরিবের আযান খালিদের কানে আসে...
খালিদ :এখন কান্না করতে হবে না।মুয়াজ্জিন ভাই কল্যানের দিকে আসতে বলছে।চলুন আগে কল্যানের দিকে যাই। পরে ইনশাআল্লাহ অন্য সিদ্ধান্ত হবে।
তারপর খালিদ নামাজের জন্য মসজিদে চলে যায়।আর রিমা অযু করে নিজের রুমে নামাজ আদায় করে নেয়।
নামাজ পড়ার পর সবাই সুরা ওকিয়াহ তেলোয়াত করে।খালিদ মসজিদেই তেলোয়াত করে। মসজিদ থেকে আসার সময় হালকা নাস্তা নিয়ে আসে।
নামাজ পড়ার পর সবাই সুরা ওকিয়াহ তেলোয়াত করে।খালিদ মসজিদেই তেলোয়াত করে। মসজিদ থেকে আসার সময় হালকা নাস্তা নিয়ে আসে।
নাস্তা নিয়ে খাদিজাকে দিলে খাদিজা তা প্লেটে বেড়ে নেয়। খালিদ একই প্লেটে তার আর রিমার জন্য খাবার নিয়ে তাদের রুমে যায়।কিন্তু রিমা খেতে চাচ্ছে না।
খালিদঃ এভাবে খেতে না চাওয়া মানে আপনি আল্লাহর উপর নারাজ হয়ে আছেন।
রিমাঃমানে...?
খালিদঃ আজকেরর ঘটনার জন্যেই তো আপনি খেতে চাচ্ছেন না.. তাই না.?
রিমা :হুম(মাথা নেড়ে)
খালিদঃ এটা আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে।আল্লাহ যা করেন বান্দার ভালোর জন্যই করেন।আমরা উনার গোলাম তাই না..?উনি যা করেন তা মাথা পেতে নেওয়ার নামঈ গোলামি। আপনি খেতে চাচ্ছেন না মানে... আপনি উনার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না।আসুন খেয়ে নিন।সবাই বসে রয়েছে।আপনার খাওয়া শেষ হলে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিবো আমরা কি করবো না করবো।
খালিদের হৃদয় জুড়ানো এসব কথা শুনে রিমা আর না খেয়ে থাকতে পারে নি।খালিদ নিজের হাতে রিমাকে খাইয়ে দেয়।এবং নিজের খেয়ে নেয়।
খাওয়া শেষ হলে তারা খাবারেরর রুমে যায়।সেখানে খাদিজা ও খালিদের বাবা মা অপেক্ষায় ছিলেন।
খালিদের মাঃ দেখ মা..এভাবে ভেঙে পড়লে হবে.?? হয়তো আল্লাহ এর ভিতরে আমাদের জন্য কল্যাণ রেখেছেন।ডাক্তার যেহুতু অপারেশন করতে বলেছেন।আমার মনে হয় অপারেশন করিয়ে ফেললে ভালো হবে।আমি তোকে হারাতে.........(কান্নার জন্য আর কিছুই বলতে পারেনি)
খালিদের বাবা :অপারেশন টা করিয়ে ফেলো মা...সন্তান পরেও আবার নেওয়া যাবে। কিন্তু এভাবে মৃত্যুরর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়া মোটেও উচিৎ না।
খাদিজাঃ বুবু...আমার মনে হয় ডাক্তারের কথা মত কাজ করাই ভালো হবে।
কিছুক্ষণ নিরাবতার পর
রিমাঃ আপনারা যদি অনুমিত দেন তাহলে আমি একটা কথা বলি.??
খালিদের মাঃ আরে মা... তোমার কথা শুনার জন্যেই তো এখানে বসি আছি।বলো মা তুমি কি বলবে.??
রিমাঃমা....আমাকে কি কিছু সময় দেওয়া যাবে.??? আমি ইস্তেখারা নামাজ পড়তে চাই।ইস্তেখারার ফলাফল জেনে না হয় তারপর সিদ্ধান্ত নিই।
খাদিদের বাবাঃ আমার মনে হয় এটাই সবচেয়ে ভালো হবে।
খালিদের মাঃ এটাই ভালো হয়।ঠিক আছে মা... তুমি ইস্তেখারার আমল করো তারপর আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিও।
রিমা সবাইকে সালাম দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।খাদিজা প্লেট গুলো ধৌত করে সব গুছিয়ে রাখে।
ইশার আযান দিলে খালিদ অযু করে মসজিদে গিয়ে ২রাকাত তাইয়্যাতুল মসজিদ নামাজ আদায় করে।তারপর চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে।তারপর জামারে ফরজ নামাজ আদায় করে।
রিমা অযু করে এসে ইশার নামাজ আদায় করার পর দুই রাকাত ইস্তেখারা নামাজ আদায় করে তারপর কিছুক্ষণ জিকির করে দুরুদ পাঠ করে ইস্তেখারার দোয়াটি তিন বার পাঠ করে ডান কাত হয়ে পশ্চিম(কেবলা) দিকে মুখ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে।
খালিদ নামাজ পড়ে রুমে এসে দেখে রিমা জায়নামাজে ঘুমিয়ে আছে।
খালিদ আর তাকে জাগ্রত না করে খাবারের রুমে চলে যায়।খালিদের মা রিমার কথা জানতে চাওয়াতে রিমা ঘুমাচ্ছে বলে জানিয়ে দেয়।
খাবার শেষে খালিদের মা এসে একবার দেখে যায়।রিমা এখনো ঘুমাচ্ছে দেখে আর উনি রিমাকে ডাকেন নি।
আজ খালিদের খাদিজার সাথে রাত্রি যাপন করার কথা।কিন্তু খালিদের মন চাচ্ছে আজ রিমার সাথে থাকতে।রিমাকে সময় দিতে।কিন্তু রিমাকে সময় দিতে গিয়ে যদি আবার খাদিজার হোক নষ্ট হয়ে যায়।
খাদিজা টেনশনে পড়ে যায়।মনে মনে ভাবে আজ উনার(খালিদ)রাত্রি যাপন আমার সাথে।কিন্তু উনি আজ বুবুকে সময় দিলে ভালো হবে।আমি কিভাবে বলি আপনি বুবুকে আজ রাত্রি সময় দিন। আমি বলাতে যদি উনি কষ্ট পেয়ে যান?
দুইজনেই চায় খালিদ যেন রিমার সাথে থাকে।কিন্তু একে অপরের হকের কথা চিন্তা করে কেউ কাউকে কিছু বলতে পারছেনা।
দুইজনেই নিরাবতা পালন করছে।কেউ কাউকে মুখ খুলে কিছু বলতে পারছেনা।
কিছুক্ষণ পর
খাদিজা :অনুমিত দিলে একটা কথা বলতাম।
খালিদঃ জী বলুন।
খাদিজা বলতে গিয়েও পাচ্ছে না।মুখ আটকে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর অনেক কষ্টে...
খাদিজা :আজ যদি আপনার কোন চাহিদা না থাকে তাহলে আপনি যদি বুবুর রুমেই থাকতেন..? উনাকে সময় দিতেন.?? তাহলে উনার জন্য অনেক ভালো হতো।
খাদিজার কথা শুনে খালিদ অবাক হয়ে যায়।তারপর খুশি হয়ে খাদিজাকে জড়িয়ে ধরে।
খালিদঃ আমি চাইছি আজ রাত টা উনার সাথে থাকার জন্য... কিন্তু আপনার হক নষ্ট হবে ভেবে আপনাকে বলতে গিয়ে ও বলতে পারিনি।আল্লাহ আপনাকে আপনার এই ত্যাগের বিনিমিয়ে উত্তম জাযা দান করুক।
তারপর খালিদ খাদিজার কপালে ভালোবাসার নিদর্শন দিয়ে রিমার রুমে চলে আসে।
খালিদ রুমে গিয়ে দেখে রিমা এখনো ঘুমাচ্ছে।তাই সে চেয়ার টেনে বই একটা নিয়ে পড়তে বসে।
প্রায় রাতের ১ টার দিকে রিমার ঘুম ভাঙে।রিমা উঠে দেখে যে খালিদ বই পড়ছে।
রিমাঃ আসসালামু আলাইকুম। কি ব্যপার আপনি এখনো ঘুমান নাই।তাছাড়া আজ না বুবুর সাথে আপনার থাকার কথা.??
খালিদঃ কেন এখানে থাকলে কি আপনার কোন সমস্যা হবে.???
রিমাঃ ওমা... না.... না.... এভাবে বলছেন কেন.? আমি কি তা বলছি.??
খালিদঃ তাহলে।
রিমাঃ আজ তো উনার সাথেই আপনার থাকার কথা। এটা উনার হক।আমার জন্য আবার উনার হক নষ্ট করছেন নাতো.?? তাই বলছিলাম।
খালিদঃ জী না।উনার হক মোটেও নষ্ট করছি না। আপনার বুবুই আমাকে পাঠাইছে আপনার খেদমত করার জন্য।তাই আমি এখানে।
রিমাঃ ও...তারপরেও উনার হক টা এভাবে নষ্ট করা কি উচিৎ।
খালিদঃ অনেক হয়েছে... আর না। শুনুন উনার হক মোটেও নষ্ট করছিনা।আর কোন কথা নয়। আপনি হাত মুখ ধুয়ে নিন।আমি ভাত বেড়ে দিচ্ছি।
রিমা হাসিমুখে ঠিক আছে বলে জানায়।তারপর রিমা ওয়াশরুমে চলে যায়।
খালিদ রান্না রুমে গিয়ে দেখে সব তো ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়েছে।তাই সে সেগুলো আবার ফ্রিজ থেকে বার করেরে সিলিন্ডার গ্যাসে গরম করার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
রিমা অযু করে ফ্রেস হয়ে বসে আছে।কিন্তু খালিদ এখনো আসছেনা দেখে রিমা নিজে রান্না রুমে যায়।
রিমা রান্না রুমে গিয়ে দেখে খালিদ তরকারি গরম করছে।
রিমা রান্না রুমে গিয়ে দেখে খালিদ তরকারি গরম করছে।
রিমাঃ এত কষ্ট আবার কেন করতে গেলেন। না খেয়েই তো রাত পার করে দেওয়া যেতো।
খালিদঃ অন্য কারো জন্য তো করছি না।নিজের বউয়ের জন্য করছি।
খালিদের কথাটি রিমার হৃদয় ছোঁয়া লাগে।মনে মনে মাওলা দরবারে শোকর আদায় করে।
খালিদঃ যেহুতু এই রুমেই চলে আসলেন।তাহলেই এখানেই বসুন।আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
তারপর খালিদ নিজের হাতে রিমাকে খাইয়ে দেয়।রিমা নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে করে।তার মতে পৃথিবীতে সব চেয়ে সুখী মানুষ মনে হয় সেই।দুনিয়া থাকতেই মনে হয় জান্নাতের সুখ অনুভব করছে।
খাওয়া শেষ হলে তারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে।কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়।ফজরের আযান দিলে তারা ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করে।খালিদ মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করে।তারপর সুরা ইয়াছিন তেলোয়াত করে দুইজনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়।
প্রায় ৮ টার দিকে তারা ঘুম থেকে উঠে।খালিদ ঘুম থেকে আগে উঠে। তারপর রিমা কে আস্তে আস্তে করে মাথায় হাত বুলাতে বুলতে ডেকে নেয়।রিমা ঘুম থেকে উঠলে খালিদ ইন্তেনজার সেরে মেসওয়াক করে অযু করে রুমে আসে।ততক্ষণেও রিমা খাটের উপর বসে ছিল।
খালিদঃ উঠুন..ফ্রেস হয়ে নিন।
রিমাঃ ঠিক আছে।(মুচকি হেসে)
রিমা ফ্রেস হতে চলে যায়।খালিদ মশারি আর খাট গুছিয়ে নেয়।তারপর খাবারের রুমে গিয়ে খালিদ খাবার নিয়ে আসে।খাদিজা তাদের জন্য আগেই খাবার বেড়ে রেখে ছিল।
তারপর তারা নাস্তা করে নেয়।
খালিদঃ ইস্তেখারার কোন দিক নির্দেশনা ফেলেন.??
রিমাঃ জী।আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো দিক নির্দেশনা পেয়েছি। জানেন...? ইমাম নওবী (রহঃ) বলেন আল্লাহ তায়ালার নিকট ইস্তেখারা করার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ভালো লোকদের পরামর্শ গ্রহন করা দরকার।আপনি আমার একটা অনুরোধ রাখবেন.??
খালিদঃ ইনশাআল্লাহ। বলুন।
রিমাঃ আমায় ঢাকা নিয়ে যাবেন.??
খালিদঃ কেন.??
রিমাঃ আমি ঢাকায় আরো বড় ডাক্তার দেখাতে চাই।আরো উন্নতমানের মেশিনে আল্ট্রা করাতে চাই।
খালিদঃ ঢাকায়..?আপনার এই সময় এত লম্বা সফর.?? এতে তো আপনার আরো বেশি ক্ষতি হবে।
রিমাঃ হবে না ইনশাআল্লাহ।
খালিদঃ আচ্ছা আমি তাহলে বাবা মায়ের সাথে পরামর্শ করে নিই।উনারা কি বলে দেখি।
রিমাঃ হুম।চলুন আমিও যাবো।
খালিদঃ ঠিক আছে চলুন।
তারপর তারা সালাম দিয়ে বাবা মায়ের রুমে প্রবেশ করে।
খালিদঃ মা... একটা পরামর্শ ছিল।
খালিদের মা;: হ্যা বাবা...বলো
খালিদঃ মা...উনি ঢাকায় যেতে চাচ্ছেন। ঢাকায় ভালো ডাক্তার আর উন্নত মানের মেশিনে আল্ট্রা করাতে চাচ্ছেন। এখন আপনারা কি বলেন.?
খালিদের মাঃএত লম্বা সফর.?? তাছাড়া ঐখানে কাকে দেখাবি.?কোথায় থাকবি.?? কিছুই তো জানা নাই।
খালিদঃ মা..ডাক্তার দেখানো আর থাকা নিয়ে সমস্যা নাই।আমার বন্ধু রাশেদ এর সাথে যোগাযোগ করলে এসব ব্যবস্থা হয়ে যাবে।কিন্তু উনার এই সময় এত লম্বা সফর নিয়ে আমি টেনশনে আছি।
খালিদের মাঃ হুম। আসলেই এই মুহুর্তে এত লম্বা সফর.?? ঠিক হবে না।
রিমাঃ মা... আপনার অনুমিত দিন।আমি পারবো ইনশাআল্লাহ।
খালিদের বাবাঃ বউমা যখন যেতে চাচ্ছে।তাহলে নিয়ে যা।বাস বা ট্রেন ওর জন্য নিরাপদ নয়।এর চেয়ে আমার মনে হয় টাকা একটু বেশি খরচ হলেও একটা এম্বুলেন্স ভাড়া করে নিলে ভালো হয়।
খালিদের মা;: হুম।এটাই সব চেয়ে ভালো হয়।
খালিদঃ ঠিক আছে মা.. তাহলে আমি রাশেদের সাথে কথা বলে এম্বুলেন্স ঠিক করে নিই।
খালিদের মাঃ ঠিক আছে।
খালিদের মাঃ তাহলে মা আমি দোকানে যাচ্ছি।আপনাদের কিছু লাগবে.??
খালিদের মাঃ না আপাতত কিছু লাগবে না।
খালিদঃ ঠিক আছে।আসসালামু আলাইকুম।
খালিদের মাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম।
খালিদ তারপর খাদিজার সাথে দেখা করে দোকানে চলে যায়।
রিমা তাদের সাথে (শাশুড় শাশুড়ি) কিছুক্ষণ কথা বলে খাদিজার রুমে যায়।তারপর তারা বিভন্ন কথা বলতে বলতে দুপুরের খাবার তৈরী করার প্রস্তুতি নেয়।
জোহরের নামাজের পর খাদিজা তার শশুর শাশুড়িকে ভাত বেড়ে দেয়।উনারা (শশুর শাশুড়ি) ভাত খাওয়ার পর উনাদের রুমে চলে যায়।
কিছুক্ষণ পর খালিদ আসলে তারা রিমা সহ তিন জন ভাত খায়।
খাওয়ার পর...
খালিদঃ রাশেদের সাথে কথা হয়েছে।ও মোটামুটি সব ব্যবস্থা করে রাখবে।আমাদের কাল ভোরে ভোরে রওনা দিতে বলছে।তাহলে আমরা ১০ টার আগে ঢাকায় পৌছালে দুপুরবেলা রেষ্ট নিয়ে বিকাল বেলা ডাক্তার দেখাতে পারবো। এখন আপনার কি খেয়াল.. ভোর চার টার দিকে বের হতে পারবেন.?? তাহলে এম্বুলেন্স এর সাথে কথা বলতাম।
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ আমি পারবো।আপনি আব্বা আম্মার সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা করেন।
খালিদঃ ঠিক আছে।
তারপর খালিদ তার পিতা মাতার সাথে কথা বলে আগামিকাল ভোর চার টায় বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।এবং এম্বুলেন্স ঠিক করে।
চলবে ইনশাআল্লাহ
শিক্ষা
★মসজিদে প্রবেশ করে না বসে দুই রাকাত তাইয়্যাতুল মসজিদ নামাজ পড়া সুন্নত। -- বুখারী ৪৪৪
★যখন কোন মোবাহ ও জায়েজ কাজের ব্যপারে সন্দেহ দেখা দেয়,মনস্থির করতে না পারলে বিশেষ এক পদ্ধতিতেতে আল্লাহর নিকট মজ্ঞল প্রার্থনা করাকে ইস্তেখারা বলে। এই নামাজ আদায় করা সুন্নত।
ইস্তেখারা সংক্রান্ত কয়েকটি তথ্য
★ছোট বড় সকল বিষয়ে ইস্তেখারা করার অভ্যাস গড়ে তোলা।
★ দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করতে হবে আল্লাহ আমায় যে কাজ করারা তাওফিক দিয়েছেন তাতেই আমার কল্যাণ নিহীত রয়েছে। তাই একান্ত মনোযোগ সহকারে স্থীর চিত্তে এবং আল্লাহর মহত্ত্ব ও বড়ত্ব এর কথা স্মরণ করে তার নিকট দোয়া করা।
★মহিলাদের হায়েজ নেফাজের অবস্থায় নামাজ না পড়ে শুধু দোয়া পড়লেই হবে।
★ফরজ, ওয়াজিব এবং নাজায়েজ কাজের জন্য ইস্তেখারা করা যাবে না।
ইস্তিখারা করার নিয়ম:
১) নামাযের ওযুর মত করে ওযু করতে হয়।
২) ইস্তিখারার উদ্দেশ্যে দু রাকায়াত নামায পড়তে হয়।
৩) নামাযের সালাম ফিরিয়ে আল্লাহ তায়ালা বড়ত্ব, ও মর্যাদার কথা মনে জাগ্রত করে একান্ত বিনয় ও নম্রতা সহকারে আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দুরূদ পেশ করার পর নিচের দুয়াটি পাঠ করা:
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺘَﺨِﻴﺮُﻙَ ﺑِﻌِﻠْﻤِﻚَ ﻭَﺃَﺳْﺘَﻘْﺪِﺭُﻙَ ﺑِﻘُﺪْﺭَﺗِﻚَ ﻭَﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣِﻦْ ﻓَﻀْﻠِﻚَ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﺗَﻘْﺪِﺭُ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻗْﺪِﺭُ ﻭَﺗَﻌْﻠَﻢُ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﻭَﺃَﻧْﺖَ ﻋَﻠَّﺎﻡُ ﺍﻟْﻐُﻴُﻮﺏِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﺗَﻌْﻠَﻢُ ﺃَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟِﻲ ﻓِﻲ ﺩِﻳﻨِﻲ ﻭَﻣَﻌَﺎﺷِﻲ ﻭَﻋَﺎﻗِﺒَﺔِ ﺃَﻣْﺮِﻱ ﻓَﺎﻗْﺪُﺭْﻩُ ﻟِﻲ ﻭَﻳَﺴِّﺮْﻩُ ﻟِﻲ ﺛُﻢَّ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟِﻲ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﺗَﻌْﻠَﻢُ ﺃَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺷَﺮٌّ ﻓِﻲ ﺩِﻳﻨِﻲ ﻭَﻣَﻌَﺎﺷِﻲ ﻭَﻋَﺎﻗِﺒَﺔِ ﺃَﻣْﺮِﻱ ﻓَﺎﺻْﺮِﻓْﻪُ ﻋَﻨِّﻲ ﻭَﺍﺻْﺮِﻓْﻨِﻲ ﻋَﻨْﻪُ ﻭَﺍﻗْﺪُﺭْ ﻟِﻲَ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮَ ﺣَﻴْﺚُ ﻛَﺎﻥَ ﺛُﻢَّ ﺍﺭْﺿِﻨِﻲ ﺑِﻪِ
এ ব্যাপারে হাদিসঃ
# হযরত জাবের (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) প্রত্যেক কাজে আমাদের ইস্তিখারা করা সম্পর্কে এমন ভাবে শিক্ষা দিতেন যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, তোমাদের কেউ যখন কোন কাজ করার করবে তখন সে দুরাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, এরপর সে পাঠ করবে: (উল্লেখিত দু'আটি)
অর্থ: হে আ্ল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণ চাই –আপনার ইলমের সাহায্যে।
আপনার কাছে শক্তি কামনা করি আপনার কুদরতের সাহায্যে।
আপনার কাছে অনুগ্রহ চাই আপনার মহা অনুগ্রহ থেকে।
আপনি সর্বোময় ক্ষমতার অধিকারী –আমার কোন ক্ষমতা নাই।
আপনি সর্বজ্ঞ – আমি কিছুই জানি না।
আপনি সকল গোপন বিষয় পূর্ণ অবগত।
“হে আল্লাহ, আপনার ইলমে এ কাজ আমার দ্বীন আমার জীবন-জিবীকা ও কর্মফলের দিক থেকে(অথবা বলেছিলেন, দুনিয়া ও পরকালের দিক থেকে মন্দ হয়) তবে তা আমাকে করার শক্তি দান করুন।
পক্ষান্তরে আপনার ইলমে এ কাজ যদি আমার দ্বীন আমার জীবন-জিবীকা ও কর্মফলের দিক থেকে তবে আমার ধ্যান-কল্পনা একাজ থেকে ফিরিয়ে নিন। তার খেয়াল আমার অন্তর থেকে দূরীভূত করে দিন।
আর আমার জন্যে যেখানেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে এর ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে এরই উপর সন্তুষ্ট করে দিন । (বুখারী )
দোয়ার সময়ে প্রয়োজনটির কথা স্মরণে রাখতে হবে।আরবি জানলে আরবিতে দোয়ার ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ এর স্থলে প্রয়োজনটির নাম বলতে হবে এবং সবশেষে আরবিতে প্রয়োজনটির জন্য দোয়া করতে হবে।আরবি না জানলে এই দোয়া পড়ে বাংলায় দোয়া করতে হবে।দোয়াটি মুখস্ত করতে পারলে ভালো।মুখস্ত না থাকলে দেখে পড়া যাবে।
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺘَﺨِﻴﺮُﻙَ ﺑِﻌِﻠْﻤِﻚَ ﻭَﺃَﺳْﺘَﻘْﺪِﺭُﻙَ ﺑِﻘُﺪْﺭَﺗِﻚَ ﻭَﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣِﻦْ ﻓَﻀْﻠِﻚَ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﺗَﻘْﺪِﺭُ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻗْﺪِﺭُ ﻭَﺗَﻌْﻠَﻢُ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﻭَﺃَﻧْﺖَ ﻋَﻠَّﺎﻡُ ﺍﻟْﻐُﻴُﻮﺏِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﺗَﻌْﻠَﻢُ ﺃَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟِﻲ ﻓِﻲ ﺩِﻳﻨِﻲ ﻭَﻣَﻌَﺎﺷِﻲ ﻭَﻋَﺎﻗِﺒَﺔِ ﺃَﻣْﺮِﻱ ﻓَﺎﻗْﺪُﺭْﻩُ ﻟِﻲ ﻭَﻳَﺴِّﺮْﻩُ ﻟِﻲ ﺛُﻢَّ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟِﻲ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﺗَﻌْﻠَﻢُ ﺃَﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺷَﺮٌّ ﻓِﻲ ﺩِﻳﻨِﻲ ﻭَﻣَﻌَﺎﺷِﻲ ﻭَﻋَﺎﻗِﺒَﺔِ ﺃَﻣْﺮِﻱ ﻓَﺎﺻْﺮِﻓْﻪُ ﻋَﻨِّﻲ ﻭَﺍﺻْﺮِﻓْﻨِﻲ ﻋَﻨْﻪُ ﻭَﺍﻗْﺪُﺭْ ﻟِﻲَ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮَ ﺣَﻴْﺚُ ﻛَﺎﻥَ ﺛُﻢَّ ﺍﺭْﺿِﻨِﻲ ﺑِﻪِ
এ ব্যাপারে হাদিসঃ
# হযরত জাবের (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) প্রত্যেক কাজে আমাদের ইস্তিখারা করা সম্পর্কে এমন ভাবে শিক্ষা দিতেন যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, তোমাদের কেউ যখন কোন কাজ করার করবে তখন সে দুরাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, এরপর সে পাঠ করবে: (উল্লেখিত দু'আটি)
অর্থ: হে আ্ল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণ চাই –আপনার ইলমের সাহায্যে।
আপনার কাছে শক্তি কামনা করি আপনার কুদরতের সাহায্যে।
আপনার কাছে অনুগ্রহ চাই আপনার মহা অনুগ্রহ থেকে।
আপনি সর্বোময় ক্ষমতার অধিকারী –আমার কোন ক্ষমতা নাই।
আপনি সর্বজ্ঞ – আমি কিছুই জানি না।
আপনি সকল গোপন বিষয় পূর্ণ অবগত।
“হে আল্লাহ, আপনার ইলমে এ কাজ আমার দ্বীন আমার জীবন-জিবীকা ও কর্মফলের দিক থেকে(অথবা বলেছিলেন, দুনিয়া ও পরকালের দিক থেকে মন্দ হয়) তবে তা আমাকে করার শক্তি দান করুন।
পক্ষান্তরে আপনার ইলমে এ কাজ যদি আমার দ্বীন আমার জীবন-জিবীকা ও কর্মফলের দিক থেকে তবে আমার ধ্যান-কল্পনা একাজ থেকে ফিরিয়ে নিন। তার খেয়াল আমার অন্তর থেকে দূরীভূত করে দিন।
আর আমার জন্যে যেখানেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে এর ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে এরই উপর সন্তুষ্ট করে দিন । (বুখারী )
দোয়ার সময়ে প্রয়োজনটির কথা স্মরণে রাখতে হবে।আরবি জানলে আরবিতে দোয়ার ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ এর স্থলে প্রয়োজনটির নাম বলতে হবে এবং সবশেষে আরবিতে প্রয়োজনটির জন্য দোয়া করতে হবে।আরবি না জানলে এই দোয়া পড়ে বাংলায় দোয়া করতে হবে।দোয়াটি মুখস্ত করতে পারলে ভালো।মুখস্ত না থাকলে দেখে পড়া যাবে।
tag
0 coment rios:
আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।