সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ২৬
কাসিম খালিদ আর কাসিমের ছেলেরা ইশার নামাজ আদায় করে বাড়ি আসার সময় রাতে খাবার ক্রয় করে নিয়ে আসে। তারপর বাড়ি এসে খালিদ আর রিমা তাদের রুমে আর বাকিরা একসাথে রাত্রের খাবার খায়। খাবারের পর রিমা প্লেট ধৌত করে গুছিয়ে রাখে।
তারপর রিমা এসে খালিদের সাথে বসে বসে বই পড়ে।
তারপর খালিদ আর রিমা অযু করে এসে সুরা মুলক তেলোয়াত করে। তেলোয়াত করার পর ঘুমানোর প্রিপারেশন নেয়।তারপর তারা একে অপরের পারিশ্রমিক সুদে আসলে পরিশোধ করে দেয়।
তারপর রিমা এসে খালিদের সাথে বসে বসে বই পড়ে।
তারপর খালিদ আর রিমা অযু করে এসে সুরা মুলক তেলোয়াত করে। তেলোয়াত করার পর ঘুমানোর প্রিপারেশন নেয়।তারপর তারা একে অপরের পারিশ্রমিক সুদে আসলে পরিশোধ করে দেয়।
❤️❤️❤️❤️❤️
গোসল করে এসে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে বিতর আদায় করে তারপর নেক সন্তান কামনায় ও যাবতীয় হাজত মাওলার পেশ করে।তারপর তারা কিছুক্ষন ঘুমায়।
ফজরের আযান দিলে খালিদ উঠে পরে।খালিদ অযু করে এসে রিমা কে জাগিয়ে দেয়। তারপর খালিদ সুন্নত আদায় করে। রিমা অযু করে রুমে আসলে খালিদ গামছা এগিয়ে দিয়ে মসজিদে চলে যায়।
নামাজ পড়ে এসে খালিদ সুরা ইয়াছিল তেলোয়াত করে।তারপর সে কাসিম ও তার ভাতিজা দের এগিয়ে দেওয়ার জন্য বের হয়।
খালিদঃ কি উমর রেডি তো... ভাইয়া দেন ব্যাগ আমার হাতে দিন।
কাসিমঃ তুই কষ্ট করে যাওয়া লাগবে না।আমি আবু বক্কর আর উমর চলে যেতে পারবো। ৩ জন আছে তো সমস্যা নাই।
খালিদঃ সমস্যা নাই। বাজার পর্যন্ত দিয়ে আসি।
কাসিমঃ আরে লাগবে না। আমরা ৩ জন আছি। চলে যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
উমরঃ চাচ্চু আপনি এখন ঘুমান। আমরা চলে যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ ।আপনার চোখ দুটো কেমন লাল হয়ে গেছে। সারারাত মনে হয় ঘুমান নি.??
উমরের কথা শুনে খালিদ লজ্জা পেয়ে যায়। কি বলবে বুঝতে পারছে না।
খালিদঃ আচ্ছা ঠিক আছে ভাই। তাহলে আপনারা যান ফি-আমানিল্লাহ।
এই ঠিক মত পড়ালিখা করবি ঠিক আছে। আগামিতে যেন তোদের পিছনে তারাবির নামাজ পড়তে পারি ঠিক আছে..?
এই ঠিক মত পড়ালিখা করবি ঠিক আছে। আগামিতে যেন তোদের পিছনে তারাবির নামাজ পড়তে পারি ঠিক আছে..?
আবু বক্কর :ইনশাআল্লাহ। দোয়া করবেন। চাচ্চু.. আসসালামু আলাইকুম
খালিদ দুই ভাইকে কিছু টাকা হাদিয়া দেয়।
তারপর কাসিম ও তার দুই ছেলে সবাই থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে।খালিদ রুমে এসে ঘুমায়।রিমা বড়ভাবির সাথে রান্না ঘরে গিয়ে সকালের নাস্তা বানানোর জন্য রান্না ঘরে যায়।
১ঘন্টা পর হঠাৎ খালিদের ফোন আসে।ঘুমন্ত অবস্থায় চোখ খুলে দেখে কাসিমের ফোন।
খালিদঃ আসসালামু আলাইকুম।
ফোনের ঐ পাশ থেকেঃওয়ালাইকুমুসসালাম। আপনি এই ফোনের মালিকের কি হোন।(কান্না কন্ঠে)
খালিদঃ আমি উনার ভাই।কি হয়েছে ভাই। আমার ভাই কই।আপনি কে...?
:গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়েছে.??? উনার অবস্থা গুরুতর। উনাকে সদর হস্পিতাল এ আনা হয়েছে।আপনি তারাতারি আসুন।
খালিদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো।একলাফ দিয়ে খাট থেকে নেমে পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে কাউকে কিচ্ছু না বলে খালিদ সামনের দরজা দিয়ে বের হয়ে চলে যায়। খালিদ হস্পিতাল পৌছানোর আগেই কাসিম মারা যায়।
রিমা আর বড়ভাবি নাস্তার জন্য রুটি বানাচ্ছিল। রিমা রুটি বেলে দিচ্ছে আর বড়ভাবি রুটিকে আগুনের তা(তাপ) দিচ্ছে।রিমার সাথে কথা বলতে বলতে রুটি তাপ দেওয়ার সময় উনার হাত তাপ লেগে যায়।উনি রুটি ফেলে একটা উহ শব্দে আওয়াজ দেয়।
রিমা বুঝতে পেরে কিছুই না বলে তারাতরি দৌড়ে খাবারের রুমে এসে ফ্রিজ খুলে বরফ নিয়ে যায়।তারপর বড়ভাবির হাতে বরফ লাগিয়ে দেয়।
রিমাঃ ভাবি আপনি ঘরে যান।বরফ লাগিয়ে রাখুন।আমি বাকিগুলো একা একা করে নিচ্ছি।
বড়ভাবি : ভাবি....আপনি তো একা একা পারবেন না।
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ পারবো। আপনি রুমে যান।প্রয়োজনে আরো কিছু বরফ নিয়ে তা পলিব্যাগে (পলিথিন) করে হাতে লাগান।
বড়ভাবি খারাবের রুমে এসে আরো কিছু বরফ নিয়ে তা পলিব্যাগে নিয়ে হাতে লাগায়।উনার রুমে গিয়ে বসেন।
রিমা বাকী কাজ গুলো সেরে খাবারের রুমে সব কিছু নিয়ে আসে।তারপর তার শশুর শাশুড়িকে নাস্তা করতে খাবারের রুমে আসার জন্য উনাদের রুমে গিয়ে বলে আসে। বড়ভাবি কেও নাস্তা করতে ডাক দেয়।উনারা(শশুর শাশুড়ি) আসলে রিমা উনাদের রুটি আর ডিম বেড়ে দেয়।
খালিদের মাঃ বড় বউমা কই।
রিমাঃ মা... উনি আসতেছেন।
বড়ভাবীঃ আসসালামু আলাইকুম। মা.. এইতো আমি চলে আসছি।
খালিদের মাঃ দেখি দেখি তোমার হাতে কি হয়েছে.??বরফ লাগাচ্ছো কেন.?
বড়ভাবীঃ ও।কিছুনা মা.? হালকা আগুনের তাপ লাগছে।
খালিদের মাঃ ওমা...কখন হলো.?? আমি একটু দেখি...?
ও আল্লাহ... এত টুকু পুড়ে গেছে অথচ আমায় জানাও নাই কেন.??
রিমা দেখে রিমাও অবাক হয়ে যায়। অনেক টাই ঝলছে গেছে অথচ বড়ভাবি এমনভাবে ভাব ধরেছিলো। মনে হয় যেন হালকা তাপ লাগছে যা বরফ লাগিয়ে দিলে ভালো হয়ে যাবে।
খালিদের মাঃ এই তুই কি মানুষ.??? এত টুকু ঝলছে গেছে অথচ আমায় বলিস নাই। নাকি আমাকে তোর মা ভাবস না.???(কান্না করতে করতে)
বড়ভাবীঃ মা...আসলে...
খালিদের মাঃ চুপ একটা কথাও বলবি না।
তারপর খালিদের মা উঠে গিয়ে নিজের রুমে যায়।রুম থেকে silver sulphadaizine 1% মলম এনে ঝলসানো স্থানে লাগিয়ে দেয়।
বড়ভাবীঃ মা... এবার তো আপনি নাস্তা করে নিন।আপনাকে আবার সময় মত ওষুধ খেতে হবে।আমার ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
খালিদের মায়ের যেন কান্না থামছেই না।
বড়ভাবীঃ মা...আপনি এভাবে কান্না করলে তো আপনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়বেন।পরে তো আরো কষ্ট বেড়ে যাবে। আসুন নাস্তা করে নিন।
খালিদের মাঃ আয় আমার সাথে বসো।
তারপর খালিদের মা নিজের হাতে বড়ভাবি কে খাইয়ে দেয়।
শাশুড়ি বৌয়ের এমন আচরণ দেখে রিমা আবেগে আফ্লুত হয়ে যায়।নিজের অজান্তে রিমার চোখে পানি ফেলে দেয়। রিমার নিজের ও ইচ্ছে করছিল শাশুড়ির হাতে খাওয়ার।কিভাবে যে সেটা খালিদের মা বুঝতে পারেন।
খালিদের মাঃ এই ছোট বউমা আসো। এক মেয়েকে খাইয়ে দিচ্ছি আরেক মেয়ে দাড়িয়ে থাকবে তা হয় না। নে হা.... করো।
খালিদের মা নিজের মেয়ের মত ছেলেদের বউদের খাইয়ে দেয়।এবং নিজে খেয়ে নেয়।
খালিদের মাঃ বড় বউমা.. আজ আর রান্না ঘরে যাওয়ার দরকার নাই।রুমে নিয়ে রেষ্ট নাও। ছোট বউমা... তুমি একটু কষ্ট করে হালকা কোন কিছু রান্না করে নিও কেমন.?? আলুর বত্তা আর ডাল হলেই চলবে।
রিমাঃ ঠিক আছে মা।
খালিদের মাঃ আর খালিদের জন্য নাস্তা নিয়ে যাও।ওকে বলবে যেন দোকানে যাওয়ার আগে বড় বউমার জন্য ওষুধ এনে দিয়ে যায়।
রিমাঃ ঠিক আছে মা।
তারপর সবাই সবার রুমে চলে যায়।রিমা নাস্তা নিয়ে তাদের রুমে যায়।কিন্তু রুমেতো খালিদ নাই।রিমা ভাবলো হয়তো টয়লেটে গেছে, চলে আসবে তাই সে অপেক্ষা করতেছে।অনেক্ষন অপেক্ষা করার পর সে টয়লেটে আছে কিনা তা দেখার জন্য আসে।কিন্তু না টয়লেটে তো নাই।রিমা সামনের রুমে গিয়ে দেখে সামনের রুমের দরজা খোলা।
রিমা মনে মনে চিন্তা করে কি ব্যাপার উনি আবার কই গেলো।দোকানে চলে গেলেন না তো...?
রিমা মায়ের রুমে সালাম দিয়ে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করে।
রিমাঃ মা...আপনাদের ছেলে তো ঘরে নাই।উনি দোকানে চলে গেলেন নাকি একটা ফোন যদি দিয়ে দেখতেন.??
খালিদের মাঃআচ্ছা ঠিক আছে আমি ফোন দিচ্ছি।
খালিদের মা খালিদ কে ফোন দেয়। ১ম বার খালিদ ফোন রিসভ করে নাই।খালিদের মা আবার ফোন দেয়।
খালিদঃ আসসালামু আলাইকুম।
খালিদের মাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম, কিরে বাবা তুই কই। আমায় না বলে দোকানে চলে গেলি নাকি।
খালিদঃ না মা... দোকানে যাই নাই। একটি জরুরী কাজে এক জায়গায় এসেছি।আমি আসতেছি।
এই বলে খালিদ ফোন কেটে দেয়।
খালিদের মাঃ খালিদ নাকি জরুরী কাজে কই গেছে।চলে আসতেছে।
কিন্তু তার কথা গুলো কেমন কেমন মনে হচ্ছে। খালিদ তো কখনো আমায় না বলে কোথাও যায় না, যত কাজই থাকুক। (মনে মনে চিন্তা করে)
আচ্ছা বউমা তুমি খাবার গুলো ডেকে রাখো। ও চলে আসবে।
রিমা ঠিক আছে বলে ওর রুমে চলে যায়।খাবার গুলো খাবারের রুমে এনে ডেকে রাখে।
খালিদ আসার আগেই কাসিমের মৃত্যুর সংবাদ তাদের বাড়িতে পৌছে যায় । খালিদের মা বাবা বড় ভাবি খবর শুনার পর যেন তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।বড়ভাবি জোড়ে একটা চিৎকার দিতে গিয়ে থেমে যান।
কারন তখন রিমা পড়ছিল ইন্নালিল্লাহি..........।
তখন বড় ভাবির মুখ থেকে বের হয় ইন্নালিল্লাহি........।
কারন তখন রিমা পড়ছিল ইন্নালিল্লাহি..........।
তখন বড় ভাবির মুখ থেকে বের হয় ইন্নালিল্লাহি........।
বড়ভাবি এটা বলতে বলতেই খালিদের মা ও বড় ভাবি বেহুস হয়ে পড়েযায়। রিমা আর খালিদের মা তাদের ধরে উনাদের রুমে নিয়ে যায়।রিমা কি করবে বুঝতে পারছে না। কাকে ধরবে বড় ভাবি কে নাকি শাশুড়ি কে। পাশের বাড়ি থেকে চাচি শাশুড়ি দুই জন আসলে রিমা তাদের কে শাশুড়িকে দেখতে বলে রিমা বড়ভাবির রুমে চলে যায়।
কিছুক্ষন পানির ছিটকা মুখে মারার পর বড়ভাবির জ্ঞান ফিরে।বড়ভাবি উঠে বসে রিমা কে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে। রিমা কান্না ও কান্না শুরু করে।
আস্তে আস্তে বাড়িতে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশী উপস্থিত হয়।দীর্ঘ ১ ঘন্টার পর খালিদের মায়ের জ্ঞান ফিরে।তখন উনার বোন(খালিদের খালা) উনার পাশে ছিলেন।তখন উনি বোন কে ধরে কান্না শুরু করে।
এক এক জন এক একজনকে শান্তনা দেয়।কেউ কেউ বড়ভাবিকে আবার কেউ কেউ খালিদের মাকে শান্তনা দেয়।কিন্তু এর মাঝেও আবার কেউ কেউ রিমাকে নিয়ে দোষারোপ শুরু করেরে।
একবার আগের ঘরে স্বামিকে খেয়েছে। এই ঘরে এসে এবার ভাসুর কে খেয়েছে।এই মেয়ে তো বড় অলক্ষ্মী।তারাতরি এই মেয়েকে এই বাড়ি থেকে বিদায় করো।এই তোমরা কাসিমের বউয়ের কাছ থেকে এই অলক্ষ্মী মেয়েকে উঠিয়ে দাও।আরো নানা ভাষায় রিমাকে টার্গেট কর অনেক কথা বলে।
এসব কথা শুনার পর রিমার কষ্ট আরো বেড়ে যায়।তার চোখের পানি পড়ার মাত্রা আরো বেড়ে যায়।সে মাথা কে উপরের দিকে তুলে মাওলার সাথে যেন কি হিসাব নিকাশ করে।বড়ভাবি নিজের কষ্টের মাঝেও রিমার কষ্ট বুঝতে পেরে রিমাকে আরো শক্ত করে ধরে রাখে।রিমা যেন ওদের কথায় এখান থেকে উঠে না যায়।
বড়ভাবি আরো শক্ত করে ধরে রাখায় রিমা বুঝতে পারে বড়ভাবি তার বরের মৃত্যুর জন্য রিমাকে দোষারোপ করছে না। সব মাওলার হুকুমেই হয়।রিমা বুঝতে পারছে বড়ভাবির এই মুহুর্তে বড়ভাবি রিমাকে বেশি পাশে চান।তাই রিমা মুর্খদের সকল কথা সহ্য করেও বড়ভাবির পাশে থাকে।
খালিদের বাবা খালিদের সাথে যোগাযোগ করে খাটিয়া আনেন।গোসল করানোর জন্য বড়ই পাতা সহ সকল কিছুর ব্যবস্থা করেন।
বড়ভাবির ভাই গিয়ে মাদ্রাসা থেকে আবু বক্কর আর উমর কে নিয়ে আসেন।সাথে বড়ভাবির মা বাবা আসেন খালিদের বাড়িতে।
খালিদ আর উমর আসলে সবাইকে বড়ভাবির রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলে। সবাই চলে যায়। বড়ভাবি চাচ্ছেন না রিমাও চলে যাক।কিন্তু পর্দার সমস্যা হবে দেখে রিমা কে ছেড়ে দেন। রিমা তার শাশুড়ির রুমে চলে যায়।রিমা কে দেখে শাশুড়ির কান্না আরো বেড়ে যায়।রিমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে।এই সময় অনেকেই রিমাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় রিমার খালা শাশুড়ি তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে।ফলে তারা নানা ধরনের কথা বলতে বলতে খালিদদের বাড়ি থেকে চলে যায়।
বড়ভাবি আবু বক্কর আর উমরকে কোলের মাঝে জড়িয়ে ধরে কান্না করে।এই সময় আবু বক্কর আর উমর ও কান্না শুরু করে।
লাশ আসছে লাশ আসছে বলে কেউ একজন ডাক দিতে থাকে। আবু বক্কর আর উমর এই কথা শুনে তারাতরি ঘর থেকে দৌড়ে বাহির হয়ে যায়।
(পুলিশ ও হস্পিতাল এর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে করতে খালিদের লাশ আনতে অনেক দেরী হয়।)
আবু বক্কর আর উমর চলে যাওয়ার পর বড়ভাবির পাশে ছিল উনার মা।
বড়ভাবিঃ মা.... আপনাদের জামাই বুঝি এখন লাশ হয়ে গেছে।কেউ দেখি উনার নাম ধরেএখন আর ডাকে না। সবাই দেখি শুধু লাশ বলে।উনি বুঝি লাশ হয়ে গেছেন......
এসব কথা বলতে বলতে বড়ভাবি উনার মাকে জড়িয়ে ধরে আরো বেশি কান্না করে।
খালিদ গাড়ি থেকে নামতে নামতেই দেখে আবু বক্কর আর উমর গাড়ির দিকে দৌড়ে আসতেছে।খালিদ তারাতরি গাড়ি থেকে নেমে আবু বক্কর আর উমর কে জড়িয়ে ধরে।এসময় আবু বক্কর আস্তে আস্তে কান্না করলেও উমর জোড়ে জোড়ে কান্না শুরু করে।
উমরঃ চাচ্চু...... আমার আব্বু কই।সকালে তো আমাদের মাদ্রাসায় নামিয়ে দিয়ে অফিসে চলে গেছে।সবাই কেন বলে আমার আব্বু মারা গেছে। আপনি বলুন চাচ্চু.... আমার আব্বু কই। আমি জানি সবাই মিথ্যা বললেও আপনি মিথ্যা বলবেন না। বলেন না চাচ্চু... আমার আব্বু কই।
খালিদ এতক্ষন নিজেকে কন্ট্রোল করে রাখলেও উমরের এসব কথা শুনে খালিদ নিজেকে আর কন্ট্রোল রাখতে পারে নাই।সেও উমর আর আবু বক্কর কে ধরে কান্না শুরু করে দেয়।
পরে উমরের মামা এসে খালিদ কে শান্তনা দেয়।
উমরের মামাঃ খালিদ ভাই।এই মুহুর্তে আপনি যদি ভেঙে পড়েন তাহলে এদের সামলাবে কে..? প্লিজ ভাই আপনি শক্ত হোন।
চলবে ইনশাআল্লাহ
শিক্ষা
★কারো মৃত্যুর সংবাদ পড়লো ইন্নালিল্লাহি.......... পড়তে হয়।
★জন্ম,মৃত্যু সব কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে। এতে নতুন বউয়ের কোন দোষ নাই। যে কেউ এরকম দোষারোপ করবে তার ঈমান আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
★মৃত ব্যক্তির শোকে জামা কাপড় ফাড়া-চেরা করা,বুক চাপড়ানো,চিৎকার করে কান্না করা জায়িজ নাই।(বুখারী ১২১৯) তবে মনের দুঃখে স্বাভাবিক যে চোখের পানি চলে আসে তাতে সমস্যা নাই।
★জীবতদের কান্নার কারনে অবশ্যই মৃতদের আযাব দেওয়া হয়।-বুখারী ১২১৩
★কারো মৃত্যুতে তিন(৩) দিনের বেশি শোক পালন করা জায়িজ নাই।-বুখারী ১২০৫
মৃত ব্যক্তির জন্য পরিবার বর্গের জন্য করনীয়
★মৃত ব্যক্তির দাফন কাপন ও জানাযার ব্যবস্থা করা।
★মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা-সুরা হাশরঃ১০
★মৃত ব্যক্তির মানত ও অসিয়ত পুর্ণ করা-আবু দাউদ২৮৭৭
★মৃত ব্যক্তির জন্য দান সদকা করা-বুখারী১৬৩১
★মৃত ব্যক্তির সওয়াবের জন্য মসজিদ, মাদ্রাসা, হস্পিতাল, রাস্তাঘাট, টয়লেট, ইত্যাদি তৈরী করা যা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে কিয়ামত পর্যন্ত সওয়াব হবে।
★মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানি দেওয়া-ইবনে মাযাহ।
★মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তাদের অনাদায়ী হজ্জ,উমরা,রোযা ইত্যাদি আদায় করা।-মুসলিম ১৯৩৫
মাইয়েতের পরিবারের সাথে আত্মীয় সহ অন্যদের যা করনীয়
★মৃতের পরিবারের জন্য একদিনের খাবার তৈরী করে পাঠানো। দুঃখের কারনে তারা খেতে না চাইলেও পীড়াপীড়ি করে খাওয়ানো।
★মৃতের পরিবার কে সান্ত্বনা দিবে।
★মৃতের পরবিবার কে ছবর ও ধৈর্যের ফযীলত বর্ণনা এবং ধৈর্যের প্রতি উৎসাহ করা।
★উচ্চ আওয়াজে কান্না করলে মাইয়াতের আযাব বেশি হয় এই ধরনের কথা বলে উচ্চ আওয়াজ থেকে মৃতের পরিবার কে বিরত থাকতে বলা।
শরিয়াহ পরিপন্থী কাজ
★আমাদের দেশে নতুন বউ ঘরে আসলে যদি ঘরে বা ফ্যামিলিতে কোন সমস্যা বা ঐ ফ্যামিলির কারো মৃত্যু হয়।তখন এই জন্য সম্পুর্ণ নতুন বউয়ের উপর দোষারোপ করা হয়। যা পরিপুর্ণ শরীয়ত বিরুধি।
★প্রচলিত শোক প্রস্তাব অনুমোদন ও ১ মিনিট নিরবতা পালনের কোন শরঈ ভিত্তি নাই।এগুলো পরিত্যাজ্য।
tag
0 coment rios:
আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।