সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ২৫Md Abdul Kaiyum
কিছুক্ষন পর খালিদ নামাজ পড়ে দোকান থেকে আসলে তারা একসাথে খাবার খায়। খাবার খাওয়ার পর রিমা খালিদের মুখ মুছে দেয়।খালিদ রুমে চলে যায়।রিমা প্লেট ধৌতকরে গুছিয়ে রাখে।তারপর রিমা তাদের রুমে যায়।
খালিদঃ আজ কিন্তু রান্না অনেক ভালো হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ্।
রিমাঃ আমাকে খুশি করার জন্য বলছেন। জানি।
খালিদঃ আরে সত্যি বলছি।খুব ভালো হয়েছে।
রিমাঃ আলহামদুলিল্লাহ্। তাহলে আমার পারিশ্রমিক টা দিয়ে দিন।
খালিদ রিমাকে পারিশ্রমিক দিয়ে দেয়। এবং রিমা ও সকালবেলা খালিদ যে তাকে অনেক কাজে সহযোগিতা করছে তার পারিশ্রমিক দিয়ে দেয়।
খালিদঃ আচ্ছা আমি যাই। আপনি বিশ্রাম নিন।
রিমাঃ ঠিক আছে। ফি আমানিল্লাহ। রাতে একটু তারাতরি আসিয়েন।
খালিদ তার পিতামাতার সাথে দেখা করে দোকানে চলে যায়। রিমা বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বিছানায় পিঠ লাগায়।আর সাথে সাথে রিমার ঘুম চলে আসে।আসরের প্রায় ১ঘন্টা আগে রিমার ঘুম ভেঙে যায়। রিমা অযু করে এসে তাইয়াতুল অযু নামাজ আদায় করে।তারপর সে খালিদের টেবিল থেকে একটি বই নিয়ে পড়া শুরু করে। আসরের আযান দিলে রিমা নামাজ পড়তে চলে যায়।
নামজ পড়ার পর রিমা তরিকারি গুলো গরম করে এবং সন্ধ্যারর নাস্তার জন্য চা তৈরী করে ফ্লাক্সে রাখে। তারপর রিমা তার শাশুড়িরর সাথে বিভিন্ন টপিক নিয়ে আলোচনা করে। মাগরিবের আযান দিলে তারা নামাজ পড়তে যায়। নামাজ পড়ার পর সুরা ওকিয়াহ তেলোয়াত করে তারা নাস্তা করে।তারপর তারা বড়ভাবির সাথে ফোনে কথা বলে। বড় ভাবি আগামিকাল সকালে চলে আসবে বলে জানায়। তারপর রিমা তাদের বাড়িতে ফোন দিয়ে কথা বলে। তারপর রিমা ঘরে আসে বই পড়ে।ঈশার নামাজ আদায় করে রিমা তার শশুর শাশুড়িকে ভাত বেড়ে দেয়।তারা ভাত খেয়ে তাদের রুমে ঘুমাতে চলে যায়।রিমা প্লেটগুলো ধৌত করে গুছিয়ে রেখে তার শশুর শাশুড়িরর রুমে গিয়ে মশারি টাঙিয়ে দেয়।তারপর রিমা তার রুমে এসে বই পড়ে।খালিদ আসলে তারাতরি দরজা খুলে দেয়। রুমে গিয়ে খালিদের পাঞ্জাবির বোতাম খুলে দেয়। খালিদ আসার সময় রিমার জন্য সুন্নত হিসেবে কিছু হাদিয়া আনে। তা রিমার হাতে দেয়। রিমা খুব খুশি হয়। তারপর রিমা খালিদ কে গামছা এনে দেয়। খালিদ বাথরুমে চলে যায়। রিমা তাদের জন্য ভাত বাড়তে খাবারের রুমে চলে যায়।খালিদ অযু করে মুখ মুছে খাবারের রুমে যায়। তারপর তারা একসাথে খাবার খায়।খাবারের পর প্লেট গুলো গুছিয়ে রেখে তারা রুমে যায়। তারপর ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়।রাতে উঠে তারা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে। ফজরের আযান দিলে খালিদ সুন্নত নামাজ আদায় করে মসজিদে চলে যায়। যাওয়ার আগে রিমার কপালে চুমো দিয়ে সুন্নত টা আদায় করে যায়।রিমা নামাজের রুমে নামাজ পড়তে চলে যায়।নামাজ পড়ার পর রিমা সুরা ইয়াছিল তেলোয়াত করে ঘরে এসে খালিদের তেলোয়াত শ্রবন করে।
খালিদঃ আপনি চা বানিয়ে নিন।কালকের মত আমি কিছু নিয়ে আসি।
রিমাঃ আমি পারবো না। চা বানাতে।
কথাটি শুনে খালিদ যেন হতভম্ভ হয়ে যায়।
খালিদঃ আপনি কি আসুস্থ.???
রিমাঃ না।আমায় অগ্রিম পারিশ্রমিক না দিলে। আমি চা বানাবো না। (মুচকি হাসতে হাসতে)
খালিদঃ ও... এই ব্যাপার। আগে বলবেন না.?? আমি তো শুধু পারিশ্রমিক না. বোনাস দেওয়ার জন্যেও প্রস্তুত ছিলাম।
তারপর খালিদ রিমাকে চা বানোনো অগ্রিম পারিশ্রমিক ও বোনাস দিয়ে দেয়।
রিমাঃ আমি চা বানিয়ে নিচ্ছি আপনি বাজার থেকে কিছু নিয়ে আসুন।
খালিদঃ না.. আমি যাবো না।
রিমাঃ কেন.???
খালিদঃ আমায়ও অগ্রিম পারিশ্রমিক না দিলে আমিও বাজারে যাবো না।
রিমাঃ ও... আমি কাউকে অগ্রিম পারিশ্রমিক দিই না।
খালিদঃ তাহলে আমি ও বাজারে যাবো না।
রিমাঃ আপনি বাজারে না গেলে আমার কি.??
আপনার বাবা মা শুধু চা খেয়ে থাকবে। এতে আমার কোন সমস্যা হবে না।তাই বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে বাজার থেকে কিছু নিয়ে আসেন।
খালিদঃ বাজার থেকে আসলে পারিশ্রমিক দিবেন তো.??
রিমাঃ সেটা তখন দেখা যাবে।
খালিদ ভাবছিল সেও আগ্রিম পারিশ্রমিক পাবে কিন্তু তা না পেয়ে সে বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে অনিচ্ছাসত্ত্বেও মুখ ভার করে পাঞ্জাবি গায়ে দিবে বাজারের দিকে রওনা দেয়। তাদের রুম থেকে যখন বের হবে তখন রিমা খালিদের হাত ধরে পেলে।
রিমাঃ অগ্রিম পারিশ্রমিক পান নাই বলে আর মুখ ভার করে আর থাকতে হবে না।
এই বলে রিমা খালিদের কপালে পারিশ্রমিক ও বোনাস দিয়ে দেয়। খালিদের মন ভালো হয়ে যায়।মুখে হাসি ফুঁটে উঠে।
রিমাঃ মুখ ভার করে রাখলে আমার বর টাকে ভালো দেখাই না। তাকে হাসিখুশি থাকলেই ভাল দেখায়।আমি সব সময় আপনার মুখে হাসি দেখতে চাই।
খালিদঃ তাহলে যে সব সময় অগ্রিম পারিশ্রমিক দিতে হবে।
রিমাঃ ঠিক আছে শুধু অগ্রিম না সাথে অগ্রিম বোনাস ও দিবো ইনশাআল্লাহ।
তারপর তারা মুচকি হাসে।
রিমাঃ কয়টা বাজে খবর আছে..? তারাতরি যান বাজারে যান।আমি চা বানিয়ে নিচ্ছি।
খালিদঃ ঠিক আছে। আমি যাচ্ছি।
রিমাঃ ফি-আমানিল্লাহ
খালিদ বাজারে চলে যায় রিমা রান্নাঘরে গিয়ে চা বানিয়ে নেয়। খালিদ নাস্তা নিয়ে আসলে তারা একসাথে নাস্তা করে।
খালিদঃ মা.... আজ দুপুরে খিচুরি রান্না করি.??
খালিদের মাঃ তুই রান্না করবি..?
খালিদঃ হুম...
রিমাঃ আপনি দোকানে যাবেন না.??
খালিদঃআমি শুক্রবার সকালে দোকান খুলি না।
রিমাঃ ও... আপনি খিচুরি রান্না করতে পারেন.???
খালিদঃ হুম। হোস্টেলে থাকতে কত রান্না করছি। তাছাড়া আমরা যখন বৃহঃস্পতিবার শব গুজারিতে যেতাম তখন আমরা খিচুরি রান্না করে নিয়ে যেতাম। আমি ই খিচুরি রান্না করতাম।
রিমাঃ ও. তাহলে তো আজ খেয়ে দেখা যায়। কি বলেন
আম্মা।
আম্মা।
খালিদের মাঃ ঠিক আছে।কাসিম আর বড় বউ কিন্তু আসবে। সাথে আবু বক্কর আর ওমর( কাসিমের দুই ছেলে) ও আসবে বেশি করে বানাতে হবে কিন্তু।
খালিদঃ আলহামদুলিল্লাহ্ তাহলেই তো ভালোই হলো আজ পুরো ফ্যামিলি একসাথ হবো।
খালিদের মা :হুম
খালিদঃ আচ্ছা মা তাহলে কাজে নেমে পড়ি। আপনি দোয়া করিয়েন
খলিদের মা খালিদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।তারপর খালিদের মা আর বাবা তাদের রুমে চলে যায়।
খালিদঃ আপনি কি আমায় কাজে সাহায্য করবেন।
রিমাঃ করতে পারি।একটা শর্তে.???
খালিদঃ কি শর্ত?
রিমাঃ পারিশ্রমিক দিতে হবে।
খালিদঃ এখানে..??এখানে সম্ভব না।
রিমাঃ তাহলে কখন দিবেন।
খালিদঃআচ্ছা রাত্রে। সুদে আসলে মিলিয়ে পারিশ্রমিক দিয়ে দিবো।
রিমাঃআমাকে বুঝি রাত্র পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে.???
খালিদঃকিচ্ছু করার নাই। জানেন তো??? ভালো কিছু পেতে হলে একটু অপেক্ষা করতে হয়।
রিমাঃ ও তাই বুঝি.??
খালিদঃ হুম।ঠিক মত কাজ করতে হবে। কাজে ফাঁকি দিলে কিন্তু পারিশ্রমিক পাবেন না।
রিমাঃ ঠিক আছে বা..আ...বুর্চি মশাই। ঠিক মত মনোযোগ সহকারে কাজ করবো।(মুচকি হাসতে হাসতে)
খালিদঃ ঠিক আছে। তাহলে শুরু করি।বিসমিল্লাহ
রিমাঃ বিসমিল্লাহ
তারা দুইজনে মিলে আলু পেয়াজ কেটে নেয়। রিমা বিভিন্ন মসলা বেটে নেয়।খালিদ চাল ডাল আলু গরুর গোস্ত ধৌত করে নেয়।তারপর খালিদ চুলায় আগুন দেয়।পাতিল বসিয়ে তৈল গরম করে তারপর আস্তে আস্তে বিভিন্ন মসলা দিয়ে গরুর গোস্ত সিদ্ধ করে নেয়।আস্তে আস্তে বাকিগুলো দেয়।
রান্না যখন মাঝামাঝি অবস্থায় তখন কাসিম ও বড়ভাবি চলে আসে।
তারা এসে তাদের পিতামাতার দেখা করে।তখন কাসিম জানতে পারে আজ খালিদ নিজে খিচুড়ি রান্না করছে।
কাসিমঃ তুমি রুমে যাও তাহলে আমিও যাচ্ছি ভাই কে সাহায্য করতে।আজ দুই ভাই মিলে রান্ন করাবো।
বড়ভাবীঃ এই এই শুনুন। এই ড্রেসে রান্নাঘরে যাবেন নাকি।ড্রেস চেঞ্জ করে নিন।
কাসিম:ও.. তাই তো। আচ্ছা আমি রুমে গিয়ে চেঞ্জ করে রান্নাঘরে যাচ্ছি তুমি আব্বা আম্মার সাথে কথা বলে রুমে এসো।
বড়ভাবি:আচ্ছা ঠিক আছে।
কাসিম রুমে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে রান্নাঘরের দিকে যায়।রান্না ঘর থেকে খালিদ আর রিমার কথার হালকা হালকা আওয়াজ আসায় কাসিম আর সরাসরি ভিতরে না ডুকে বাহির এক পাশে দাড়িয়ে যায়।
কাসিমঃ আসসালামু আলাইকুম। রিমা... তুমি বরং আমাদের রুমে যাও।তোমার বোনের সাথে কথা বলো। আমি খালিদের সাথে খিচুরি রান্না করবো।
খালিদঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম।
খালিদ রিমাকে ঈশারা দেয় চলে যাওয়ার জন্য। রিমা বড়ভাবির রুমের দিকে চলে যায়। কাসিম রান্নাঘরে প্রবেশ করে।দুইভাই খিচুরি রান্না করে।
রিমা বড়ভাবির রুমের সামনে গিয়ে সালাম দেয়।বড়ভাবি সালামের জওয়াব দিয়ে ভিতরে আসতে বলে।রিমা রুমে প্রবেশ করলে আবু বক্কর আর উমর রুম থেকে বের হয়ে যায়।তারা জানে চাচির সাথে পর্দা করতে হয়।তারা রুম থেকে বের হয়ে বাহিরে গিয়ে অন্যদের সাথে খেলাধুলা করে।
রিমা আর বড়ভাবি নানা ধরনের কথা বলে এই কয়েকদিন কার কিভাবে কাটলো তা নিয়ে আলোচনা করে।
খালিদ আর কাসিম মিলে খিচুরি রান্না শেষ করে তা ঘরে নিয়ে আসে।তারপর খালিদ রুমে যায়।কাসিম তার রুমের সামনে গিয়ে সালাম দিলে রিমা বড়ভাবিদের রুম থেকে বের হয়ে তাদের রুমে চলে যায়।
রিমা তাদের রুমে প্রবেশ করে খালিদ কে দেখে তো পুরো হতভম্ভ হয়ে যায়। খালিদ কে তো চিনাই যাচ্ছে না।পুরো শরীর ঘামে ভিজে রয়েছে।শরীরের বিভিন্ন অংশে কালি লেগে রয়েছে।রিমা তারাতরি করে নিজের ওড়না দিয়ে খালিদের ঘাম ও শরীরে লেগে থাকা কালি মুছে দেয়। গায়ের গেঞ্জি খুলে দেয়।
রিমা :আজ অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাই না.??
খালিদঃ মাঝে মাঝে প্রত্যেক স্বামীর উচিত এমন কষ্ট করা এতে সে বুঝতে পারবে তার স্ত্রী তার জন্য কত কষ্ট করে রান্না করে।তখন সে আর কখনো রান্নার জন্য খোটা বা প্রহর করতে সাহস করবে না।
রিমা কি বলবে বুঝতে পারছে না।
খালিদঃ জানেন.. প্রত্যেক পুরুষের উচিত মাঝে মাঝে ছুটির দিনে তার পরিবার কে রান্না করে খাওয়ানো এতে পরিবারের মাঝে একে অপরের প্রতি জোর মিল মোহাব্বত সৃষ্টি হবে।হিংসা বিদ্বেষ ধুলিস্যাত হবে।
রিমা কি বলবে কিছুই বুঝতেছেনা।খালিদের কথা গুলো শুনে তার চোখ থেকে অটোমেটিক পানি পড়তে থাকে।
খালিদঃএই.. আপনার চোখে পানি কেন?? আমি কি ভুলে আপনাকে কোন কষ্ট দিয়ে ফেললাম নাকি.??
রিমাঃ সব চোখের পানি কষ্টের হয় না।মাঝে মাঝে চোখের পানি গুলো সুখের ও হয়।
কথাগুলো বলতে বলতে রিমা খালিদ কে জড়িয়ে ধরে।
রিমাঃ আপনি খুব একজন ভালো মানুষ। কেউ আপনার মত এভাবে কেউ তার স্ত্রী পরিবারদের জন্য চিন্তা কিনা আমার জানা নাই।
খালিদঃ আসলে কি জানেন.?? ইসলাম এমনি.নবীজি (সঃ)আমাদের কে হাতে কলমে এভাবে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আমাদের সমাজের সকল সেক্টরে আমরা যদি নবীজী (সঃ) এর সুন্নত মতাবেক চলতে পারি তাহলে সমাজের সকল সেক্টরে আমরা সুন্দর ভাবে জীবন পরিচালনা করতে পারবো। রাষ্ট্রে যদি ইসলাম কে ক্ষমতায় আনতে পারি তাহলে মানুষের পুরো জীবন টা বদলে যেত। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের সমাজের মানুষ গুলো নবীজির আদর্শ কে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে কেউ আব্রাহাম লিংকন কেউবা কাল মার্কস,কেউবা লেলিনের মনগড়া আদর্শ কে বাস্তবায়ন করতে চায়। ফলে মানুষ প্রতি পদে পদে লাঞ্চনার শিকার হয়।ঘরে ঘরে হিংসা পরনিন্দা ইত্যাদি লেগেই আছে।
রিমাঃ ঠিক বলছেন।
খালিদঃ সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে।যারা নাকি দেশে ইসলাম কে ক্ষমতায় আনার জন্য সমাজের সকল সেক্টরে সুন্নাহ কে বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে আমরাতো তাদের সাহায্য করি না,বরং আমাদের মাঝে এমনও লোক আছে তারা, ঐসব লোকদের যারা নাকি ইসলাম কে ক্ষমতার আনার জন্য কাজ করে তাদেরকে বাশ (ক্ষতি) দেওয়ার জন্য বসে থাকে।
খুব দরদ মাখা কান্না বিজারিত কন্ঠে খালিদ কথা গুলো বলল। রিমা তার ওড়না দিয়ে খালিদের চোখের পানি মুছে দেয়।
রিমাঃ আপনি আপনার লক্ষে এগিয়ে চলুন।আপনার পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করতেই থাকুন কিভাবে সমাজের সকল সেক্টরে নবীজির সুন্নাহ জিন্দা করা যায়।ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আপনার সাথে থাকবেন।
কথাগুলো বলে রিমা খালিদের কপালে একটা চুমো দেয়।তারপর ঊঠে গিয়ে খালিদ কে গামছা আর লুঙি এনে দেয়।
রিমাঃ যান।তারাতরি গোসল করে নিন। আযান তো দিয়ে দিবে। সুরা কাহফ কখন তেলোয়াত করবেন.??
খালিদঃ যাচ্ছি।
খালিদ রিমার থেকে গামছা আর লুঙি নিয়ে বাথরুমে চলে যায়।গোসল করে এসে সুরা কাহফ তেলোয়াত করে। এই সময় রিমা গোসল করে আসে। তারপর রিমা খালিদ কে আয়রন করা পাঞ্জাবি পড়িয়ে দেয়।আতর লাগিয়ে দেয়। মাথায় পাগড়ি বেধে দেয়। খালিদ তারপর চোখে সুরাম লাগিয়ে নেয়।তারপর খালিদ পাঞ্জাবি, পাগড়ি আতর লাগিয়ে দেওয়ায় রিমাকে পারিশ্রমিক দিয়ে মসজিদে চলে যায়।রিমা নামাজ আদায় করে সুরা কাহফ তেলোয়াত করে।
খালিদ নামাজ পড়ে দাদাদাদির কবর জিয়ারত করে। তখন কাসিম আবু বক্কর ওমর ও খালিদের বাবা ও কবর জিয়ারত করে। কবর জিয়ারত করে সবাই একসাথে ঘরে আসে। খালিদ তাদের রুমে যায়।রুমে রিমা বই পড়তে ছিল। খালিদ আসলে সালাম বিনিময় করার পর রিমা খালিদের পাঞ্জাবি খুলতে সাহায্য করে।তারপর তারা দুইজন বিভিন্ন কথা বলে বিভিন্ন আলোচনা করে।তখন বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা একসাথে খিচুরি খেতে বসে।খালিদ আর রিমা অপেক্ষা করে বাকিরা খাওয়া শেষ হলে তারা খেতে যাবে। হঠাৎ তাদের দরজার সামনে উমরের সালামের আওয়াজ
উমরঃ আসসালামু আলাইকুম.. চাচ্চু.... আসি.??
খালিদঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম, হ্যা উমর আসো আসো।
খালিদ দেখে যে উমর খিচুরির প্লেট নিয়ে এসেছে।
খালিদঃ এটা আবার কে পাঠাইলো.?
উমরঃআব্বু পাঠিয়েছে।বলছে আপনারা কতক্ষণ অপেক্ষা করবেন।তাই আমাকে দিয়ে পাঠিয়েছে।
খালিদঃ ও... আচ্ছা। দে আমায় দে।
উমর খালিদের হাতে প্লেট দিয়ে দেয়।
উমরঃ চাচ্চু.... আব্বু বলছে আজ আর দোকানে না যেতে। আজ বিকালে আমরা সবাই ঘুরতে যাবো।দাদাদাদি সহ পরিবারের সবাই।কি মজা হবে তাই না চাচ্চু?? আপনি কিন্তু দোকানে যেতে পারবেন না।নতুন কাকি কে নিয়ে আমাদের সাথে যেতে হবে।
খালিদঃ ঠিক আছে ইনশাআল্লাহ যাবো।
উমরঃ জাযাকুমুল্লাহ। চাচ্চু আমি যাই।আসসালামু আলাইকুম।
খালিদঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম।
রিমাঃ আপনি একটা জিনিষ খেয়াল করছেন??
খালিদঃ কি.??
রিমাঃ উমরের বয়স কত হবে..?? ৬ কি ৭ বছর। অথচ সে যখন আপনার সাথে কথা বলছিল।দৃষ্টি নিচু করে কথা বলছিল।এই অল্প বয়স থেকেই চাচির সাথে পর্দা করতেছে।
খালিদঃ আলহামদুলিল্লাহ্। ছোট থেকেই ওদের এসব প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি।ছোট থেকে শিখাই ভালো।
রিমাঃ ঠিক বলেছেন।
খালিদঃ নিন খাওয়া শুরু করুন। খালিদ স্পেশাল খিচুরি। (মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে)
তারপর খাওয়া শুধু করে। খাওয়ার পর
রিমাঃ আলহামদুলিল্লাহ্। আপনি তো ভালো খিচুরি রান্না করতে পারেন।
খালিদঃসত্যি.?? নাকি আমায় খুশি করার জন্য।
রিমাঃ সত্যি খুব ভালো হয়েছে।
খালিদঃ তাহলে এগুলো রেখে এসে আমার পারিশ্রমিক দিয়ে দিবেন।
রিমাঃ এখন নয় জনাব।রাতে না হয় সুদে আসলে নিয়া নিয়েন।
খালিদঃ তাহলে কি আমায় রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে.??
রিমাঃ জানেন ই তো।ভালো কিছু পেতে হলে অপেক্ষা করতে হয়।(মুচকি হাসতে হাসতে)
তারপর রিমা প্লেট নিয়ে ধৌত করে খাবারের রুমে নিয়ে গুছিয়ে রাখে।ততক্ষণে বড়ভাবি বাকি প্লেট গুলো ধৌত করে গুছিয়ে রাখে।
তারপর রিমা রুমে আসে। তারা কিছুক্ষন বিশ্রাম নেয়।
সাড়ে ৩টা দিকে উমর এসে সালাম দিয়ে দরজায় নক করে।
উমরঃ আসসালামু আলাইকুম। চাচ্চু উঠে পড়ুন।মাত্র ৩০ মিনিট সময়.. তৈরি হয়ে নিন।৪ বাজে গাড়ি চলে আসবে।
খালিদঃ এই ঊঠুন। তারাতরি ফ্রেশ হয়ে তৈরী হয়ে নিন।
রিমা খালিদের ডাকে উঠে যায়।তারপর সে ইন্তেনজার সেরে অযু করে রুমে আসে।তারপর খালিদ ইন্তেঞ্জার সেরে অযু করে রুমে আসে। তারপর তারা তৈরী হয়ে নেয়।
৪টা বাজে ২টা সিএন জি তাদের বাড়িতে হাজির।
তারা সবাই ঘর থেকে বাহির হয়।মাহিলারা সবাই বোরকা নিকাব হাত মুজা পা মুজা পড়ে বের হয়।তারপর তারা অদুরে দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যায়।নামাজের সময় মহিলাদের নামাজ পড়তে বেগ পেতে হলেও সুযোগ করে মহিলারা নামাজ পড়ে নেয়। তারা অনেক্ষন ঘুরাঘুরি করে। তারপর তারা একট হোটেলে যায়। ঐখানে মাগরিবের নামাজ আদায় করে তারা নাস্তা করে। মহিলারা ৩জন আলাদা কেবিনে আর পুরুষেরা ৫ জন আলাদা কেবিনে বসে নাস্তা করে।
নাস্তা করার পর তারা বাসায় ফিরে।ইশার আযান দিলে পুরুষরা নামাজ পড়তে চলে যায়।
নাস্তা করার পর তারা বাসায় ফিরে।ইশার আযান দিলে পুরুষরা নামাজ পড়তে চলে যায়।
চলবে ইনশাআল্লাহ
শিক্ষা
★মাঝে মাঝে পরিবারের সকলের মাঝে আনন্দ বিনোদনের জন্য ঘরের ভিতর স্পেশাল কিছুর ব্যবস্থা করা যায়।এতে মহিলারা কিছু হালাল বিনোদন পেতে পারে।তাছাড়া মাঝে মাঝে ঘরের কাজ গুলো করে দিলে যেমন স্ত্রীরা খুশি হয় তেমনি আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন ঘরের কাজ গুলো করা কত কঠিন।
★পরিবারের হালাল বিনোদনের জন্য মাঝে মাঝে ঘুরাঘুরির ব্যবস্থা করলে একদিকে যেমন পরিবারের সদস্যদের মাঝে মনের প্রফুল্লতা আসবে।তেমনি মাওলার সৃষ্টিজগত কে দেখাও হবে।এতে মাওলার প্রতি ভালোবাসা ও সৃষ্টি হবে।
★ চাচির সাথে দেখা দেওয়া যাবে না।
কয়েক টি তথ্য....
*ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক একজন পুরুষ মোট*
*১৪ জন নারীর সাথে দেখা করতে পারবে।*
_______________
* মায়ের মত ৫ জন*
_______________
_১| নিজের মা_
_২| দুধ মা_
_৩| খালা_
_৪| ফুফু_
_৫| শাশুড়ী_
__________________
* বোনের মত ৫ জন*
__________________
_১| আপন বোন_
_২| দুধ বোন_
_৩| দাদী_
_৪| নানী_
_৫| নাতনী_
________________
* মেয়ের মত ৪ জন*
________________
_১| নিজের মেয়ে_
_২| ভাইয়ের মেয়ে_
_৩|বোনের মেয়ে_
_৪| পুত্রবধু_
-------------------------------
*এমনিভাবে একজন মহিলার জন্যেও ১৪ জন*
*পুরুষের সাথে দেখা দেওয়া বৈধ।*
_______________
* বাবার মত ৫ জন*
_______________
_১| নিজের বাবা_
_২| দুধ বাবা_
_৩| চাচা_
_৪| মামা_
_৫| শশুর_
_________________
* ভাইয়ের মত ৫ জন*
_________________
_১| আপন ভাই_
_২| দুধ ভাই_
_৩| দাদা ভাই_
_৪| নানা ভাই_
_৫| নাতী_
_______________
* ছেলের মত ৪জন*
_______________
_১| নিজের ছেলে_
_২| ভাইয়ের ছেলে_
_৩|বোনের ছেলে_
_৪| মেয়ের জামাতা_
______________________________
*এছাড়া বাকিদের সাথে দেখা করা তো দুরের কথা,
অযথা কথাবার্তা বলাও কবিরা গুনাহ..
_চাই তা_সরাসরি হোক বা মোবাইল ফোনে হোক।
*যে গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ হয়না।
*১৪ জন নারীর সাথে দেখা করতে পারবে।*
_______________
* মায়ের মত ৫ জন*
_______________
_১| নিজের মা_
_২| দুধ মা_
_৩| খালা_
_৪| ফুফু_
_৫| শাশুড়ী_
__________________
* বোনের মত ৫ জন*
__________________
_১| আপন বোন_
_২| দুধ বোন_
_৩| দাদী_
_৪| নানী_
_৫| নাতনী_
________________
* মেয়ের মত ৪ জন*
________________
_১| নিজের মেয়ে_
_২| ভাইয়ের মেয়ে_
_৩|বোনের মেয়ে_
_৪| পুত্রবধু_
-------------------------------
*এমনিভাবে একজন মহিলার জন্যেও ১৪ জন*
*পুরুষের সাথে দেখা দেওয়া বৈধ।*
_______________
* বাবার মত ৫ জন*
_______________
_১| নিজের বাবা_
_২| দুধ বাবা_
_৩| চাচা_
_৪| মামা_
_৫| শশুর_
_________________
* ভাইয়ের মত ৫ জন*
_________________
_১| আপন ভাই_
_২| দুধ ভাই_
_৩| দাদা ভাই_
_৪| নানা ভাই_
_৫| নাতী_
_______________
* ছেলের মত ৪জন*
_______________
_১| নিজের ছেলে_
_২| ভাইয়ের ছেলে_
_৩|বোনের ছেলে_
_৪| মেয়ের জামাতা_
______________________________
*এছাড়া বাকিদের সাথে দেখা করা তো দুরের কথা,
অযথা কথাবার্তা বলাও কবিরা গুনাহ..
_চাই তা_সরাসরি হোক বা মোবাইল ফোনে হোক।
*যে গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ হয়না।
★ব্যক্তি ক্ষেত্রে পর্দার যে বিধান...তাও
ভিন্ন...যেমন
★স্বামী—স্ত্রী...স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রে কোন পর্দা
করতে হয়না...সবকিছুই দেখা বা দেখানো জায়েয
তবে অকারণে লজ্জাস্তান দেখা,নির্লজ্জতার
সামিল.মনে রাখতে হবে যে লজ্জা ইমানের
অর্ধেক...আল—হাদিস
ভিন্ন...যেমন
★স্বামী—স্ত্রী...স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রে কোন পর্দা
করতে হয়না...সবকিছুই দেখা বা দেখানো জায়েয
তবে অকারণে লজ্জাস্তান দেখা,নির্লজ্জতার
সামিল.মনে রাখতে হবে যে লজ্জা ইমানের
অর্ধেক...আল—হাদিস
***মাহরাম পুরুষদের ক্ষেত্রে মূখমন্ডল,হাতের কব্জির
নিচের অংশ এবং পায়ের চূল গিরার নিচের অংশ
দেখা বা দেখানো জায়েয তবে ফেৎনার আশংকা
থাকলে সবার ক্ষেত্রে এইটার ক্ষেত্রেও সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে...
***বেমাহরাম/পরপুরুষের ক্ষেত্রে সমস্ত শরীলই ঢেকে
রাখা জরুরী...একান্ত জরুরী কাজে বাহিরে যেতে
হলে সমস্ত শরীল ঢেকে যেতে হবে।।
গতপর্বের সম্পূরক প্রশ্ন..
নিচের অংশ এবং পায়ের চূল গিরার নিচের অংশ
দেখা বা দেখানো জায়েয তবে ফেৎনার আশংকা
থাকলে সবার ক্ষেত্রে এইটার ক্ষেত্রেও সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে...
***বেমাহরাম/পরপুরুষের ক্ষেত্রে সমস্ত শরীলই ঢেকে
রাখা জরুরী...একান্ত জরুরী কাজে বাহিরে যেতে
হলে সমস্ত শরীল ঢেকে যেতে হবে।।
গতপর্বের সম্পূরক প্রশ্ন..
প্রশ্নঃ আযল কি.??
উত্তরঃ স্ত্রী সহবাসের সময় স্ত্রীর যোনির বাহিরে বীর্যপাত করাকে আযল বলে।
স্ত্রীর অনুমতি ব্যতিত আযল করা নিষিদ্ধ
tag
0 coment rios:
আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।