Thursday, 13 September 2018

সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ২৪ Md Abdul Kaiyum

Md Abdul Kaiyum is with উম্মে সালমা and 6 others.

August 7সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ২৪Md Abdul Kaiyum
খালিদ দোকানে যাওয়ার পর রিমা একটু রেষ্ট নেয়।আছরের আযানে তার ঘুম ভাঙে। অযু করে নামাজ পড়ে নেয় সে।তারপর শাশুড়ির পরামর্শ নিয়ে লবণও ঝাল ওয়ালা তরকারিগুলোর একটা ব্যবস্থা করে। সন্ধ্যার নাস্তা বানাতে বানাতে মাগরিরের আযান দেয়।নামাজের পর রিমার শরীর কেমন জ্বর জ্বর ভাব। আজ সুরা ওকিয়াহ আর তেলোয়াত করে নাই।সন্ধ্যার নাস্তাগুলো সাজিয়ে রেখে শাশুড়িকে বলে নিজের রুমে চলে যায়। রিমা জানে মাগরিবের পড়ে এবং এশার আগে এই সময় ঘুমানো উচিত না। কিন্তু তার শরীর যে একটু বিশ্রাম নিতে চায়। তাই সে বিচানায় পিঠ লাগায়। সাথে সাথে ঘুম চলে আসে। খালিদের মা সুরা ওকিয়াহ তেলোয়াত করে নাস্তা না করেই রিমার রুমে আসে। এসে দেখে রিমা ঘুমিয়ে পড়ছে। আস্তে আস্তে কয়েক বার রিমাকে ডাক দেয় কিন্তু রিমার কোন আওয়াজ নাই। খালিদের মা পাশে গিয়ে বসে কপালে হাত দিয়ে বুঝতে পারছেন রিমার জ্বর আসতেছে। তাই উনি গিয়ে খালিদের আব্বুকে নিয়ে নাস্তা করেন।আর খালিদ কে ফোন দিয়ে রিমার ব্যপার টি জানিয়ে দেয়। খালিদের মা নাস্তা করে এসে রিমাকে জলপট্টি দেয়।
খালিদের মাঃএই রিমা...রিমা... শরীরকি বেশি খারাপ লাগছে.?? বলছিলাম না একা একা সব কাজ করতে পারবি না। কে শুনে কার কথা.?
রিমা মুখের ভিতর রেখে কি যেন বলতেছে তা খালিদের মা বুঝতে পারছে না
এশার আযান দিলে খালিদের বাবা মসজিদে চলে যায়।কিন্তু খালিদের মা নামাজ পড়তে না গিয়ে রিমাকে জলপট্টি দেয়। এশার নামাজ শেষ করে খালিদ আর খালিদের বাবা একসাথে ঘরে ফিরে।
খালিদঃ আসসালামু আইলাইকুম।
খালিদের মাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম, চলে আসছিস ভালো হয়েছে। রিমার গায়ে জ্বর আসছে।
খালিদ গিয়ে রিমার পাশে বসে কপালে হাত দিয়ে অনুভব করে রিমার গায়ে অনেক জ্বর।
খালিদঃ গায়ে তো অনেক জ্বর।
খালিদের মাঃ হুম। মাগরিবের পর থেকেই। এশার নামাজ তো পড়তে পারেনি।
খালিদঃ আপনি পড়েছেন.??
খালিদের মাঃ না। এখনো পড়া হয় নি।
খালিদঃ আচ্ছা আপনি নামাজ পড়ে নিন। আমি এখানে আছি।
খালিদের মাঃ তুই পড়ছিস।
খালিদঃ জী। দোকান বন্ধ করে তারপর এলাকার মসজিদে এসে নামাজ পড়ছি।আপনি নামাজ পড়ে নিন।
খালিদের মা:আচ্ছা আমি যাচ্ছি।
খালিদের মা আর বাবা তাদের রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।খালিদের মা অযু করে নামাজ পড়তে চলে যায়।
খালিদঃ খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না। চিন্তা করবেন না ইনশাআল্লাহ ভালো হয়ে যাবেন, চিন্তা করবেন না। (জলপট্টি দিতে দিতে আর কান্না কান্না কন্ঠে এসব বলছিল)
রিমা কিছু বলতে পারছেনা।
কিছুক্ষন পর খালিদের মা নামজ পড়ে তাদের রুমে আসে।রিমার কি অবস্থা তা দেখতে। এখনো রিমা আগের মত অবস্থা দেখে উনি খুব চিন্তিত।
খালিদঃ মা... এত চিন্তা করলে হবে.? আপনি বরং আব্বু কে নিয়ে ভাত খেয়ে নিন। আমি এখানে আছি।
খালিদের মাঃ নারে বাবা... আমার খেতে ইচ্ছে করছে না।
খালিদঃ মা... আপনি ভাত খেয়ে ওষুধ খেতে হবে। যদি এভাবে খাওয়া আর ওষুধ মিস দেন পরেতো আবার আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন।তখন কষ্ট আরো বেড়ে যাবে না.?? আপনি বরং ভাত খেয়ে ওষুধগুলো খেয়ে নিন।
আজ প্রয়োজনে clonazipam সাথে একটা খেয়ে নিয়েন। আর এত চিন্তা করবেন না। ডাক্তার বলছে না আপনি যেন কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা না করেন। পরে তো প্রেসার বেড়ে যাবে।
খালিদের মাঃ তুই এসবের কি বুঝবি. বউমার এই অবস্থা দেখে আমার গলা দিয়ে খাবার নামবে.??(কান্না করতে)
খালিদঃ আমি জানি মা... আমি তো তোমারই সন্তান তাই না। কিন্তু মা আপনাকে বুঝতে হবে উনার এই অবস্থায় আপনাকে ভেঙে পড়লে হবে না। আপনি যদি ডেঙে পড়েন তাহলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন।তখন দুই জন কে সামলানো আমার পক্ষে অনেক কষ্টের হয়ে যাবে।
খালিদের বাবাঃ খালিদের মা.. খালিদ তো ঠিক ই বলেছে।তুমি যদি এই অবস্থায় যদি এত চিন্তিত হয়ে যাও তোমার তো তাহলে প্রেসার বেড়ে যাবে। তখন তো তোমাকে নিয়ে আবার দৌড়াদৌড়ি করতে হবে। আরো এখন ঘরে বড় বৌউ মা নেই।
খালিদের মাঃ বড় বৌউ মা...তাকে তো খবর দেওয়া হয় নি।আসরের পর যখন তার সাথে কথা হয় তখন তো সবাই ভালো ছিল। আমিও বলেছিলাম সবাই ভালো আছে।তারপরে তো আর কথা হয় নাই।রিমার কথা ও জানানো হয় নাই।তাকে একটা ফোন দিই।তাকে যদি না জানাই সে পরে আবার মন খারাপ করবে।
খালিদঃ মা.. থাক না। আলহামদুলিল্লাহ এখনো এমন কোন সিরিয়াস অবস্থা হয় নি যে, বড় ভাবীকে জানাতে হবে। উনি আজ কত দিন পর বাড়ি গেছে। একটু রিলাক্সে বেড়াতে দিন।আপনি যদি এখন ফোন করে জানিয়ে দেন যে ইনি অসুস্থ.. তখন দেখা যাবে ভাবী আবার সকালে চলে আসবে। আপনি বরং আব্বুকে নিয়ে ভাত খেয়ে নিন। তারপর ওষুধ খেয়ে নিন।আর আজ মনে করে ঘুমের টাও খাবেন।
খালিদের মাঃ আচ্ছা আমি যাচ্ছি। তুই খাবি না.??
খালিদঃ মা.. আমি একটু পরে খাবো দেখি উনাকে উঠিয়ে খাওয়ানো যায় কিনা।
খালিদের মাঃআচ্ছা আমি যাচ্ছি। এই আপনি আসুন।(খালিদের বাবাকে উদ্দেশ্য করে)
খালিদের মা খাবারের রুমে চলে যায়। খালিদ রিমা জলপট্টি দিতেই থাকে আর মাঝে মাঝে রিমার হাত মুখ মুছে দেয়। রিমা এতক্ষন খালিদ ও তার মায়ের সকল কথা শুনছিলো।কিন্তু রিমে মুখ দিয়ে যে কিছু বলবে ঐরকম শক্তি রিমা পাচ্ছিলো না।
রিমা মনে মনে মাওলার দরবারে শোকর আদায় করে। এই ফ্যামিলি যে খুব ভালো তা জানা থাকলেও এত এত ভালো ফ্যামিলি তা এই সামান্য জ্বর না হলে রিমা বুঝতে পারতো না। এই সামান্য জ্বরের কারনে ফ্যামিলির সকল সদস্য কেমন চিন্তিত ও পেরেশানি গ্রস্থ। এসব কথা ভাবতে ভাবতে রিমা চোখের পানি ফেলে দেয়। কিন্তু খালিদ তখন মুখ মুছে দিচ্ছিলো বিদায় রিমার চোখের পানি আর মুখ মুছানোর গামছার পানি এক হয়ে যায়। তাই খালিদ রিমা যে চোখের পানি ছেড়ে দিয়েছে তা বলতে পারিনি।
কিছুক্ষন পর খালিদ রিমা কে রেখে খাবারের রুমে যায়।
খালিদঃ মা.. আপনাদের কিছু লাগবে.??
খালিদের মাঃ যা পাগল ছেলে.. নিজের বউ জ্বরে ভুগছে... আর সে আসছে বউয়ের খেদমত না করে মা বাবা কে দেখতে।আমাদের কিছু লাগবে না। ভাত বেড়ে নিয়ে খাওয়ার মত শক্তি আল্লাহ আমাকে এখনো দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ্‌। তুই যা বউমার পাশে থাক।এই সময় তুই তার পাশে থাকলে সে কিছুটা বল পাবে। যা আমাদের কিছু লাগবে না।
খালিদঃ না মা... আসলে আমি বলতে চাইছিলাম। উনি যে রান্না করছে.. রান্নাতে তো লবণ আর ঝাল বেশি ছিল। আপনাদের আবার খেতে কষ্ট হবে তাই আমি বলছি কি...যদি বাজার....... থেকে.....খা....বার... আন....তাম।
খালিদের মা: লবণ আর ঝাল বেশি ছিল তো দুপুর বেলা।বিকাল বেলা বউ মা এগুলো নিয়ে যথেষ্ট পরিশ্রম করে এখন তো পুরাপুরি খাওয়ার উপযোগী। তুই বাড়তি কষ্ট করতে হবে না। যা বউ মা কে সময় দে।
খালিদঃ ঠিক আছে মা... মনে করে আজ ঘুম ওষুধ খেয়ে নিও।
খালিদ জানে আজ তার মায়ের রাত্রে ঘুম আসবে না। তাই বার বার ঘুমের ওষুধ খাওয়ারর জন্য তাগিদ দিচ্ছে।
খালিদ রুমে এসে আবার রিমার সেবাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।খালিদের মা খাবার শেষ করে আবার রিমা কে দেখতে আসে। রিমার কপালে হাত বুলিয়ে উনি চলে যাচ্ছেন এমন সময়....
খালিদঃ মা.. অন্যদিন তো বড়ভাবি মশারি টাঙিয়ে দেয়। উনি তো আজ নেই তাই আমি না হয় আজ আপনাদের মশারি টা টাঙিয়ে দিই.??
খালিদের মা: থাক লাগবে না বাবা। আমি টাঙিয়ে নিতে পারবো।তুই বউ মার খেয়াল রাখ।
খালিদের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়ে উনিনি নিজের রুমে চলে যান।
খালিদ রিমাকে জলপট্টি ও রিমার হাত মুখ কিছুক্ষন অন্তর অন্তর মুছে দেয়।কিছুক্ষন পর
খালিদঃ এই যে... এখন কেমন লাগছে.??(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
রিমা চোখ খুলে.. এবং উঠার চেষ্টা করে।খালিদ রিমাকে ধরে উঠিয়ে বসায়।
রিমাঃ আমি নামাজ পড়বো।(খুব ক্ষীন কন্ঠে)
খালিদ কি বলবে তা বুঝতে পারছেনা। রিমা কি এই অসুস্থ অবস্থায় নামাজ পড়তে পারবে.?? আবার রিমা যেহেতু নিজ থেকে বলছে নামাজ পড়বে তাকে কিভাবে নিষেধ করা যায়।
খালিদঃ আপনি পড়তে পারবেন তো..?
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ পারবো।
তারপর কষ্ট করে রিনা খাট থেকে নামে। নিজে হেটে হেটে বার্থরুমে যায়।খালিদ সাহায্য করতে চেয়েছিল কিন্তু রিমা ইনশাআল্লাহ একাই পারবে বলে।তারপর রিমা অযু করে রুমে আসে।খালিদ আগে থেকেই গামছা নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। রিমা রুমে আসলে খালিদ নিজে গামছা দিয়ে পানি মুছে দেয়।এবং জায়নামাজ বিচিয়ে দেয়।রিমা নামাজে দাড়িয়ে যায়। খালিদ লক্ষ করলো রুকু সেজদা করতে রিমার অনেক কষ্ট হচ্ছে তারপরেও কষ্ট করে নামাজ আদায় করে।নামাজ আদায় করার পর রিমা খাটে এসে বসে। খালিদ জায়নামাজটি উঠিয়ে নেয়। খালিদ রিমার পাশে এসে বসে কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর কিছুটা কম কম মনে হলো।
খালিদঃ আপনি বসুন,আমি আপনার জন্য ভাত নিয়ে আসি।
রিমাঃ হুম(মাথা নেড়ে)
খালিদ উঠে গিয়ে তাদের জন্য ভাত নিয়ে আসে। তারপর খালিদ নিজের হাতে রিমাকে লোকমা তুলে দেয় এবং রিমা তা মুখে নেয়। কয়েক লোকমা খাওয়ার পর রিমা আর খেতে পারবে না বলে জানায়।তখন খালিদ আর তাকে জোর করেনি। রিমার মুখ মুছে দেয়।এবং বাকি ভাত গুলো নিজে খেয়ে নেয়। তারপর খালিদ প্লেট নিয়ে ধৌত করে করে তা গুছিয়ে রাখে। অবশিষ্ট তরকারি ফ্রিজে রেখে দেয়। তারপর খালিদ রুমে এসে রিমার হাতে একটা প্যারাসিটামল দেয়।
খালিদঃ নিন এটা খেয়ে নিন।
রিমাঃ এটা কোথ থেকে আনলেন.??
খালিদ:ঘরেই তো ছিল। ঐদিন আমার জন্য ভাইয়া আনছিল না.. আমি তো সব গুলো খাই নাই। তার আগেই আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো হয়ে গিয়েছিলাম।
রিমাঃ ও..
তারপর রিমা ওষুধ নিয়ে তা খেয়ে ফেলে।
খালিদঃ আপনি ঘুমান।আমি সব ব্যবস্থা করছি।
খালিদ মশারি টাঙিয়ে দিয়ে রিমার উপর হালকা কাঁথা (মালসি) দিয়া দেয়।এবং রিমার পশে বসে হালকা মাথা টিপে দেয়।
রিমাঃ এত কষ্ট করার দরকান নাই। আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন। আমি ইনশাআল্লাহ ঠিক হয়ে যাবো।
খালিদঃ সমস্যা নাই আপনি ঘুমান।আপনি ঘুমিয়ে পড়লে আমিও ঘুমিয়ে যাবো।
রিমার আর কিছু না বলে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করে। খালিদ পাসে বসে মাথা টিপে দেয়। কিছুক্ষন পর রিমার ঘুম চলে আসলে খালিদ উঠে গিয়ে অযু করে এসে নামাজের মনোনিবেশ হয়।নামাজের পর অনেক দীর্ঘ সময় নিয়ে মোনাজাত করে।
মোনাজাত শেষ করে আবার রিমার পাশে বসে রিমার মাথা ও কপাল টিপে দেয়। রিমার মাথা টিপতে টিপতে কখন যে তার ঘুম চলে আসে তার খবর নাই।খাটের সাথে হেলান দিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ে।
প্রায় রাতের সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ রিমার ঘুম ভেঙে যায়। রিমা উঠে বসে পড়ে। এতে খালিদের ও ঘুম ভেঙে যায়।
রিমাঃ আপনি সারারাত ঘুমান নি.??
খালিদঃ না..ইয়ে.. মানে.. ঘুমাইছি তো।
খালিদ লক্ষ করে ঘামে রিমার পুরো শরীর ভিজে গেছে।
খালিদঃ আপনি তো পুরো ভিজে গেছেন। তারাতরি এগুলো চেঞ্জ করতে হবে।না হয় পরে ঠান্ডা লেগে যাবে।
খালিদ উঠে গিয়ে ড্রয়ার থেকে জামা এনে দেয়।
খালিদঃ নিন এগুলো চেঞ্জ করে নিন।
খালিদ উঠে গিয়ে চেয়ায়ে গিয়ে বসে।কিছুক্ষন পর খেয়াল করে রিমা জামা খুলতে পারছেনা।ঘামে জামা গুলো পুরো গায়ের সাথে মিশে গেছে।খালিদ উঠে এসে জামা খুলতে সাহায্য করে।এতে রিমা লজ্জা বোধ করে।
খালিদঃ আরে এত লজ্জা পাওয়ার কি আছে। আমি তো আপনার স্বামি।
তারপর খালিদ রিমার পুরো শরীর মুছে দেয়।এবং অন্য জামা পড়িয়ে দেয়।এবং গায়ে থেকে খোলা জামা গুলো একপাশে রেখে দেয়।
খালিদঃ এখন কেমন লাগছে?
রিমাঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো। আমার জন্য আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হয়ছে তাই না.?
খালিদঃ এভাবে বলবেন না। আমি আপনার স্বামি হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব।
তারপর তারা আরো অনেক কথা বলে। কিছুক্ষন পর তারা মুয়াজ্জিন এর কন্ঠে আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর এর ধ্বনি শুনতে পাই।
খালিদঃ আপনি অযু করে আসুন।আমি সুন্নত আদায় করে নিই।
রিমাঃ ঠিক আছে।
রিমা ওযু করতে চলে যায়। খালিদ সুন্নত আদায় করার জন্য জায়নামাজে দাড়িয়ে যায়।
রিমা অযু করে রুমে এসে গামছা দিয়ে হাত মুখ মুছে নেয়। খালিদ ততক্ষণে সুন্নত নামাজ শেষ করে। তারপর রিমার কুপালে চুমো দিয়ে মসজিদে চলে যায়। রিমা নামাজ পড়ার জন্য নামাজের রুমে চলে যায়।
নামাজ পড়ার পর রিমা সুরা ইয়াছিন তেলোয়াত করে।খালিদ ও নামাজ পড়ার পর রুমে এসে সুরা ইয়াছিন তেলোয়াত করে। রিমার তেলোয়াত করা শেষ তাই সে রুমে এসে খালিদের পাশে বসে খালিদের তেলোয়াত শ্রবণ করে। খালিদের তেলোয়াত করা শেষ হয়।
খালিদ : কেমন লাগছে এখন।
রিমাঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো।জ্বর আছে বলে মনে হচ্ছে না।
খালিদ: আলহামদুলিল্লাহ্‌। আচ্ছা শুনুন।সকালের নাস্তার জন্য বাড়তি কষ্ট করবেন না। মাটির চুলাও জ্বালানোর দরকার নাই।আপাতত আপনি একটু কষ্ট করে সিলিন্ডারে চা বানিয়ে নিন।আমি বাজার থেকে কিছু নিয়ে আসি।
রিমাঃ ঠিক আছে।
তারপর রিমা উঠে গিয়ে চা বানাতে চলে যায়। পানি চুলার উপর দেওয়ার পর তার হঠাৎ খেয়াল আছে।সে তো রাত্রে জামা চেঞ্জ করছে। তার জামা তো রুমেই পড়ে আছে।তখন রিমা সিদ্ধান্ত নেয়।চা বানিয়ে নিয়ে তারপর তা ধৌত করবে।
খালিদ রুম থেকে বাহির হওয়ার সময় হঠাৎ রিমার চেঞ্জ করা জামাগুলোর উপর চোখ পড়ে।তখন খালিদ আবার পাঞ্জাবি খুলে রিমার জামা গুলো নিয়ে বাথরুমে চলে যায়।রিমা চা বানিয়ে তা ফ্লাক্সে রেখে তাদের রুমে যায়। রুমে গিয়ে দেখে তার জামা গুলো নেই।রিমার তখন মনে হয় হয়তো জামা গুলো খালিদ বাথরুমে রেখে আসে।তাই সে রুম থেকে বের হয়ে বাথরুমে যেতেই খালিদ জামা গুলো ধৌত করে বাথরুম থেকে বের হয়।
রিমাঃ আমার জামাগুলো আবার ধৌত করতে গেলেন কেন। আমি তো সময় করে ধৌত করে নিতাম।
খালিদঃআপনার এই মুহুর্তে বেশি পানি স্পর্শ করা উচিত না। ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাই আমি ধৌত করে দিলান এতে সমস্যা কি..?আমি তো বউয়ের কাজে সাহায্য করে সুন্নত পালন করছি।
রিমা আর কিছুই বলতে পারছে না।
রিমাঃ আচ্ছা দিন।আমি এগুলো মেলে দিই।
তারপর খালিদ রিমার হাতে জামাগুলো দিয়ে তার রুমে চলে যায়।রিমা জামা গুলো নিয়ে শুকানো জন্য টাঙিয়ে দিয়ে রুমে আসে। খালিদ পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে বের হবার প্রস্তুতি নেয়।
খালিদঃ চা কি বানানো শেষ.??
রিমাঃ জী.. ফাক্সে রেখে দিছি।
খালিদঃ ও আচ্ছা.. তাহলে তারাতারি যাই। দেরী হয়ে গেছে।
রিমাঃ শুনুন.?
খালিদঃ জী. আপনার কিছু লাগবে.??
রিমা :আপনি যে আমার জামাগুলো ধৌত করে দিছেন। পারিশ্রমিক নিবেন না.??
খালিদঃ ও দিবেন নাকি. আমি তো ভাবছিলাম আপনি বোধহয় দিবেন না। তাই আর চাই নি।
রিমা:আমি তো ভাবছিলাম বোনাস দিবো।(লজ্জায় মাথা নিচে করে)
খালিদঃ ও.. তাই নাকি... তাহলে তারাতরি দিয়া দিন।ঘাম শুকিয়ে যাচ্ছে তো পারিশ্রমিক তো ঘাম শুকানোর আগে দিতে হয়। (মুচকি হাসতে হাসতে)
তারপর রিমা খালিদের কপালে চুমো দেয়।
খালিদঃ আমি তারাতরি আসতেছি। আপনি আব্বু আম্মুকে নিয়ে খাবারের রুমে বসুন।
রিমাঃ ঠিক আছে।
খালিদ বাজারে চলে যায়। রিমা শাশুর শাশুড়ি কে ডাকতে চলে যায়।
কিছুক্ষন পর খালিদ পাউরুটি আর কলা নিয়ে ঘরে ফিরে।তারপর তারা সবাই মিলে নাস্তা করে।
নাস্তা করার পর খালিদ তরকারিগুলো কেটে দেয়।মোটামুটি সব কাজ এগিয়ে দেয়।রিমা নিষেধ করা সত্ত্বেও খালিদ রান্নার জন্য মোটামুটি সব কাজ এগিয়ে দেয়।
খালিদঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌।আপনার কাজে কিছু কিছু এগিয়ে দিলাম।ভাবছিলাম আমি ই রান্না করে দিবো কিন্তু দোকান খুলতে হবে। দোকানে একটু কাজ আছে না হয় আজ দোকান খুলতাম না।আপনি কষ্ট করে বাকি গুলো মায়ের সাথে পরামর্শ করে করে নিবেন।
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ। আপনি নিশ্চিন্তে দোকানে যান।ফি-আমানিল্লাহ।
খালিদ রুমে এসে গোসল করে দোকানের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। দোকানে গিয়ে কিছুক্ষন অন্তর অন্তর ফোন দিয়ে খোজ খবর নেয়।
রিমা তার শাশুড়ির পরামর্শ নিয়ে বাকি কাজ গুলো করে ফেলে। রান্না শেষ করার পর গোসল করে নেয়।আযান দিলে নামাজ পড়ে নেয় রিমা। তারপর রিমা তার শশুর শাশুড়িকে ভাত বেড়ে দেয়।তারা খুব সুন্দর ভাবেই ভাত খেলেন।তারপর নিজেদের রুমে চলে যান।রিমা প্লেট গুলো ধৌত করে গুছিয়ে রাখে।
চলবে ইনশাআল্লাহ
শিক্ষা
★স্ত্রীর ভরন-পোষন ও অসুস্থ অবস্থায় স্ত্রীরর সেবা যত্ন ও চিকিৎসারর ব্যবস্থা করা স্বামীর কর্তব্য।
স্ত্রীর জন্য স্বামীর করনীয় সমূহ
★হালাল মাল দ্বারা স্ত্রীরর ভরণ-পোষণ দেওয়া স্বামীর উপর ওয়াজিব।
★ স্ত্রী যাতে তার ছোটখাট প্রয়োজন পূরণ করতে পারে তার জন্য স্ত্রীকে হাত খরচের জন্য পৃথকভাবে কিছু দেওয়া উচিত।
★স্বামীর স্বচ্ছলতা থাকলে স্ত্রীর জন্য চাকর-নওকরের ব্যবস্থা করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব।তবে স্বামীর স্বচ্ছলতা না থাকলে স্ত্রী নিজে রান্না-বান্না (নিজের জন্য এবং স্বামীর সন্তানাদির জন্য) করা উচিত।
★স্ত্রী অসুস্থতার কারনে রান্না করতে সক্ষম না হলে রান্না প্রস্তুত বা ক্রয় করা স্বামীর দায়িত্ব।
★স্ত্রী বসবাসের জন্য প্রয়োজন অনুসারে পৃথক ঘর বা অন্তত পৃথক রুম পাওয়া স্ত্রীর অধিকার।
★স্ত্রী যদি পৃথক থাকার কথা বলে এবং স্বামীর পিতামাতা ও আত্মীয়দের সাথে একই ঘরে থাকতে রাজী না থাকে, তাহলে তার ব্যবস্থা করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব।
★শশুর শুশুড়ির খেদমত করা স্ত্রীর উপন আইনত ওয়াজিব নয়।নিজ থেকে করলে প্রচুর সওয়াব আছে। পিতামাতা খেদমত করা স্বামীর (সন্তান) দায়িত্ব। এর জন্য অন্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। তবে জবরদস্তী করে,চাপ প্রয়োগ করে স্ত্রীর দ্বারা পিতামাতার খেদমত করানো উচিত নয়।এটা স্ত্রীর প্রতি জুলুম।
★স্ত্রীর সাথে ভালো ব্যবহার করা।
★স্ত্রীর চরিত্রের ব্যপারে অহেতুক সন্দেহ বা কুধারনা করা উচিত নয়। আবার একেবারে অসতর্কতা থাকাও উচিত নয়।
★শরীয়তের মাসলা মাসায়েল স্ত্রীকে শিক্ষা দেওয়া নামাজ, রোজা ইত্যাদি ইবাদতের প্রতি তাগিদ দেওয়া,এবং শরিয়াহ পরিপন্থী কাজ থেকে স্ত্রীকে বাধা দেওয়া স্বামীর কর্তব্য।
★প্রয়োজন অনুপাতে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা। প্রতি ৪ মাসে অন্তত একবার সহবাস করা স্বামীর উপর ওয়াজিব।
★স্ত্রীর অনুমতি ব্যতিত তার সাথে আযল না করা।
★স্ত্রীর পিতা-মাতা, ভাইবোন, আত্মীয়দের সাথে দেখা সাক্ষাত করার অনুমতি প্রদান করা। তবে যাতায়াতের ভাড়া দেওয়া স্বামীর উপর আইনত কর্তব্য নয়,দিলে সেটা তার অনুগ্রহ বলে বিবেচিত হবে।তবে দেখা করতে গেলে যদি ফেতনা হওয়ার আশংকা থাকে তাহলে স্বামি স্ত্রীকে যেতে বাধা দিতে পারবে।
★স্ত্রীর সাথে সহবাস কিংবা অন্যান্য গুপ্ত বিষয় অন্যত্র প্রকাশ করা উচিত নয়।এটা ও স্ত্রীর অধিকারের আওতাভুক্ত।
★বিনা কারবে স্ত্রীকে তালাক না দেওয়া।
★ স্ত্রীর মনোরঞ্জনের জন্য অন্তত কিছু সময় নির্জনে তাকে সময় দেওয়া, তার সাথে হাসি তামাশা করা স্বামীর কর্তব্য।
★ রাত্রে স্ত্রীর নিকট শায়ন করাও স্ত্রীর অধিকার।
★ মান অভিমান করার অধিকার স্ত্রীর আছে।
★স্ত্রীর ভুল ক্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা। স্ত্রীর কোন আচরনে কষ্ট ফেলে সবর করা।
স্ত্রীদের খেয়াল রাখা জরুরী
একান্ত ঠেকা অবস্থা না হলে স্বামীকে স্বামীর পিতামাতা ভাই বোন থেকে পৃথক করে নিয়ে তাদের মনে কষ্ট দেওয়া উচিত নয়।

tag 

mizanur rahman azhari bangla waz all bangla waz 2018 mp3 bangla waz amir hamza hafizur rahman siddiki new waz 2018 bangla 2018 tarek monowar waz mahfil bangla 2018 bangla waz 2018 amir hamza bangla waz 2018 taheri tofazzal hossain full bangla waz 2018 new bd waz bangla abdullah al amin waz mahfil bangla 2017 khaled saifullah ayubi mizanur rahman azhari english waz bangla mp3 bangla waz 2017kolorober gojol badruzzaman kalarab kalarab tv holy tune gojol kalarab newainuddin al azad islamic bangla islamic salam kalarab kalarab shilpi gosthi new song 2017 kalarab allah allahmuhib khan 2018 allah boloabu rayhan 2018 holy tune record sabu rayhan islamic song kala movie ami dekhini tomay iqbal hj bangla islamic song 2017iqbal hossain jibon
kalarab new song 2018, kalarab new song, kalarab song, bangla islamic song, holy tune, kalarab shilpigosthi, kalarab tv, kalarab shilpi, kalarab new gojol, kalarab islamic song, kalarab live, kalarab shilpi gosthi new song, kalarab new islamic song, kalarab best song, kalarab bangla gojol, kalarab best gojol, kalarab bangla, kalarab bodruzzaman, kalarab by abu rayhan, kalarab new 2018, ???? ????????????, kalarab new song 2018 download, 2018 islamic song, waz


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios:

আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।