Thursday, 13 September 2018

সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ২৩ Md Abdul Kaiyum

সুন্নত জিন্দার মিশন পর্ব ২৩Md Abdul Kaiyum

দুপরের খারাব তৈরী করার পর। ভাত ও তরকারির পাতিল গুলো খাবারের রুমে নিয়ে আসে। ঠিক মত গুছিয়ে নিয়ে বড় ভাবি গোসল করতে যায়। রিমা তখন রুমে চলে আসে। প্রচন্ড গরম পড়তেছে পাখা ছেড়ে দিয়ে পাখার নিচে বসে রিমা। প্রথমে গোসল আর করবেনা ভাবলেও পরে বড়ভাবির গোসল করার পর সেও গোসল করে নেয়। যোহরের আযান দিলে খালিদের বাবা মসজিদে চলে যায় আর বাকি মহিলারা নামাজের রুমে গিয়ে নামাজ পড়ে। নামাজ পরার পর খালিদের বাবা আসলে রিমা তাদের প্রত্যেককে ভাত বেড়ে দেয়। অবশ্য বড় ভাবিকে কিছুটা জোড়করেই খালিদের মায়ের পাশে বসালো। তারপর সবার খাওয়া শেষ হলে রিমা সবাই কে গামছা এনে দেয়। তারপর তারা হাত মুখ মুছে নেয়।
বড়ভাবি :মা... আমাকে যদি অনুমতি দেন তাহলে আমি একটু আমাদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে চাই।
খালিদের মা: হুম. তোমার তো অনেক দিন হয়ে গেছে বাপের বাড়ি যাওয়া হয় না। অবশ্য যাওয়া দরকার। কিন্তু মা.. ছোট বউ মা নতুন আসছে। সে কি নতুন নতুন একা সব কাজ করতে পারবে.? আরো কয়েকদিন পরে গেলে হতো না.? ততদিনে রিমা আরেকটু শিখে নিবে।আমি যদি সুস্থ থাকতাম তাহলে হয়তো এত চিন্তা করতে হতো না।
বড়ভাবীঃ ঠিক আছে মা। আমি তাহলে আরো কয়েকদিন পরেই যাই।
তারপর বড়ভাবি তার রুমে চলে যায়। খালিদের বাবা মা তাদের রুমে চলে যায়।
রিমা প্লেট গুলো ধৌত করে গুছিয়ে রাখে। তারপর সে তার শশুরের রুমের দিকে যায়।
রিমাঃ আসসালামু আলাইকুম।
খালিদের মাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম, ছোটো বউ মা.. আসো..আসো... ভিতরে আসো।
রিমা ভিতরে প্রবেশ করে কিছু বলবে বলবে কিন্তু বলতে পারতেছেনা।
খালিদের মাঃ কিছু বলবে.??? সমস্যা নাই। কোন সংকোচ ছাড়াই বলে ফেলো??
রিমাঃ মা..এই কয়দিনে যা বুঝলাম বড়ভাবি আপনাকে খুব ভালোবাসে এবং খুব সম্মান করে। তাই আপনি আরো কয়েকদিন পরে যেতে বলাতে উনি কোন কথা না বলেই আপনার কথা মেনে নিয়েছে। কিন্তু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে উনার মন কিছু টা খারপ হয়ে গেছে।
খালিদের মাঃ আমি সেটা খেয়াল করছি।আমি ও চাই সে ঘুরে আসুক। কিন্তু আমি কি করবো বলো। তুমি নতুন আসছো। তুমি কি পারবো একা একা সব কাজ করতে।তাছাড়া আমি যদি আগের মত সব কাজ করতে পারতাম তাহলে কি এখন যেতে নিষেধ করতাম.??
রিমাঃ মা.. আমি বলি কি... আপনি আমার জন্য দোয়া করেন আমি ইনশাআল্লাহ সব কাজ করতে পারবো আপনি বরং বড়ভাবি কে যাওয়ার অনুমতি টা দিয়া দিন।
খালিদের মাঃ মাটির চুলায় রান্না করা এত সহজ না। তুমি পারবা না।
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ পারবো। আপনি শুধু দোয়া করিয়েন।
খালিদের বাবা : ছোটো বউ মা যখন এত করে বলছে তুমি বরং অনুমতি টা দিয়ে দাও। আমার ছোট বউ মা রান্না করতে পারবে। তার কনফিডেন্স আছে ইনশাআল্লাহ। কি মা... পারবে না.??
রিমাঃ জী ইনশাআল্লাহ (লজ্জা পেয়ে মাথা টা নিচু করে)
খালিদের মাঃ ঠিক আছে মা.. তুমি বরং কষ্ট করে বড় বউ মাকে একটু ডেকে দিবে.?? আর খালিদ এখনো আসে নাই.??
রিমাঃ না মা উনি এখনো আসে নাই।
খালিদের মাঃ আচ্ছা তুমি একটু বড় বউ মাকে ডেকে দাও।
রিমাঃ ঠিক আছে মা। আসসালামু আলাইকুম। (আনন্দ আনন্দ ভাব নিয়ে)
রিমা সালাম দিয়ে তার শশুরের ঘর থেকে বের হতেই খালিদের সালামের আওয়াজ প্রধান দরজা থেকে।তারাতরি গিয়ে দরজা খুলে দেয় সাথে সালামের উত্তর দেয়।
খালিদ :কেমন আছেন।
রিমাঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো। আপনি।
খালিদ :আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো।কি ব্যাপার বেশ খুশি খুশি মনে হচ্ছে।
রিমাঃ জী।
খালিদ:কি.??
রিমাঃ আচ্ছা বলব ইনশাআল্লাহ। আগে ফ্রেস হয়ে নিন। খাবার খেয়ে নিন। তারপর বলছি।
খালিদঃ নামাজ পড়ে মসজিদে কিছুক্ষন কিতাব তালিম করে এসেছি। বাড়তি ফ্রেশ হওয়ার প্রয়োজন নেই। খাওয়ার আগে হাত ধৌত করলেই হবে। আপনি বলে ফেলুন।
রিমাঃ খাবার খেয়ে ইনশাআল্লাহ বলব। আপনি রুমে গিয়ে বসুন। আমি বড় ভাবির রুম থেকে এসে খাবার নিয়ে আসছি।
খালিদঃএখন বড় ভাবির রুমে কেন..?
রিমা :ঐটাই তো খুশির খবর।
খালিদ ভাবলো হয়তো বড় ভাবি প্রেগন্যান্ট হয়েছে। তাই রিমা খুব খুশি।
খালিদঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌। আল্লাহ ছেলে মেয়ে যাই দেখ। আলহামদুলিল্লাহ্‌। মেয়ে দিলে ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ্‌।
রিমাঃ আরে দূর এসব কি বলতেছেন। আপনি রুমে গিয়ে বসুন। আমি আসতেছি।
খালিদঃ আচ্ছে ঠিক আছে।
খালিদ তার রুমে চলে যাই। রিমা বড়ভাবির রুমের সামনে যায়।
রিমাঃ আসসালামু আলাইকুম।
বড়ভাবীঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম। আসেন ভাবি ভিতরে আসুন।
রিমাঃ কি করেন।
বড়ভাবীঃএই তো একটু ঘুমাবো ভাবছি।
রিমাঃমা যেতে দেয় নাই দেখি আপনার মন খারাপ?
বড়ভাবিঃ প্রথমে মমন খারাপ হলেও পরে চিন্তা করিলাম মায়েরা যা বলে তা সন্তানের মঙ্গলের জন্য বলেন।
রিমাঃ হুম।তা ঠিক বলেছেন। আচ্ছা ভাবি যে কথা বলতে এসেছি আপনাকে মা ডাকছে। উনার রুমে এখনি যেতেন।
বড়ভাবীঃআচ্ছা আমি যাচ্ছি। ভাইয়া আছসে.?? ভাত খেয়েছেন।
রিমাঃ উনি আসছে। এখনো খাওয়া হয় নাই।
বড়ভাবীঃ একি তারাতরি খেয়ে নিন। কয়টা বাজে খবর আছে.??
রিমাঃ আমি যাচ্ছি। আপনিও মায়ের রুমে যান।আসসালামু আলাইকুম।
রিমা বড়ভাবির রুম থেকে বের হয়ে খাবারের রুমে গিয়ে খাবার বেড়ে তাদের রুমে যায়। সেখানে খালিদ অপেক্ষায় ছিল। খাবার নেওয়ার পর তারা একসাথে বসে দস্তরখানা বিছিয়ে খাবার খাওয়ার পর রিমা নিজের ওড়নার নিয়ে খালিদের মুখ মুছে দেয়।
খালিদঃ খুশির খবর টা কিন্তু এখনো বলেন নাই।
রিমাঃ আচ্ছা এগুলো রেখে আসছি।
খালিদঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
রিমা প্লেট আর বাটি নিয়ে ধৌত করে সেগুলো গুছিয়ে রেখে রুমে আসে।
খালিদঃ জী এবার তো বলুন খুশির খবির টা কি.??
রিমাঃ আজ দুপুরে খাওয়ার পর বড়ভাবি উনার বাড়িতে যাওয়ার জন্য আম্মার কাছে অনুমতি চাইছেন।কিন্তু আমি একা সব কাজ করতে পারবো কিনা এই কারনে আম্মা অনুমতি দেয় নাই।
খালিদঃ তো এখানে তো কোন খুশির খবর দেখছিনা। উনি অনেক দিন উনার বাড়িতে যাওয়া হয় না। উনার তো যাওয়ার দরকার।
রিমাঃ হুম।সেটাই বলছি আগে তো পুরো কথাটি বলতে দিবেন তো।
খালিদঃ ও আচ্ছা জী বলুন।
রিমাঃ মা যখন অনুমতি দেয় নাই। বড়ভাবির মন টা খারাপ হয়ে যায়। উনি রুমে চলে যান। অবশ্য মায়ের ও মন খারাপ হয়ে যায় অনুমতি না দিতে পেরে।মুলত আমি সংসারের সব কাজ করতে পারবো কিনা এই ভয়ে অনুমতি দেয় নাই। পরে আমি বাবা মায়ের রুমে গিয়ে উনাদের কে বলছি যে, মা.. আমি ইনশাআল্লাহ সব কাজ করতে পারবো আপনি বড়ভাবিকে যাওয়ার অনুমতি টা দিয়ে দিন। এরপরেও মা রাজি ছিল না।তারপর আমি বারবার বলাতে সাথে আব্বাও যোগ হওয়াতে মা রাজি হয়। মা আমাকে উনার রুমে বড়ভাবিকে ডেকে পাঠাতে বলেন। তাই তো তখন আমি বড়ভাবির রুমে গিয়েছিলাম উনাকে ডাকতে। বলেন তো মা যখন বড়ভাবি কে অনুমতি দিবেন বড়ভাবি কত খুশি হবেন তাই না.??
খালিদ:হুম বড় ভাবি খুশি হবেন তা ঠিক। কিন্তু আপনি এই মাটির চুলাতে রান্না করতে পারবেন তো..?
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ পারবো। মাকে বলছি আমার জন্য দোয়া করতে আপনাকেও বলি আমার জন্য দোয়া করিয়েন।
খালিদঃ দোয়া করতে হলে হাদিয়া দেওয়া লাগে। আমি হাদিয়া ছাড়া দোয়া করি না। (রসিকতা করে)
রিমাঃ হাদিয়া তো মানুষ নিজ খুশি মতে দেয়। হাদিয়া চেয়ে নেওয়াকে কি জায়েজ হবে.??
খালিদঃ আমি এত কিছু বুঝিনা। হাদিয়া দিলে দোয়া হবে না দিলে দোয়া হবে না।
রিমা :আচ্ছা হাদিয়া হিসেবে কি চান???
খালিদঃ কপলারের দিক হাত ইশারা করে।
রিমাঃ এইটা...? এসব হাদিয়া তো আমি ডাবল -রিডাবল করে বাড়তি দিই।
খাদিলঃ কি.??? সবাই কে দেন নাকি?
রিমা :আরে না। সবাইকে কেন দিবো শুধু মাত্র একজন কে দিবো।
তারপর রিমা খালিদের কপালে চুমো দেয়।
খালিদঃ আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনাকে রাঁধুনি হিসেবে কবুল করে নেয়।
রিমাঃ আমিন।
খালিদঃ আচ্ছা আপনি একটু বিশ্রাম নিন। আমি দোকানে যাচ্ছি।
রিমাঃ ফি-আমানিল্লাহ।
খালিদ দোকানে চলে যায়। রিমা খাটে গিয়ে ঘুমায়।
ঘুম থেকে উঠে দেখে আছরের আযানের এখনো প্রায় ৩০ মিনিট সময় আছে। তাই রিমা অযু করে এসে খালিদের টেবিল থেকে একটি বই নিয়ে পড়া শুরু করে।বইটি ছিল পাকিস্তানের (করাচী) বড় আলেম হযরত মাওলানা আকতার (রঃ) এর লিখা ""#প্রিয়_নবীজীর_প্রিয়_সুন্নত"" রিমা এখানে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে সারাদিনের মোটামুটি অনেক গুলো সুন্নত সম্পর্কে ধারনা লাভ করে। বইটি অর্ধেক পড়ার পর আছরের আযান দিলে রিমা বইটি রেখে নামাজের রুমে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ পড়ার পর দুপুরের খারাব গুলো গরম ও সন্ধ্যার নাস্তা তৈরী করতে রান্না ঘরে যায়। বড় ভাবিই সব কাজ করতেছে রিমা শুধু কাজ গুলো এগিয়ে দিচ্ছে।
রিমাঃ ভাবি... মা কি বলল.??
বড়ভাবীঃ উনি যা বলছেন তাতে বুঝলাম এখানে সব কারিসমা আপনার।
রিমাঃ কখন যাচ্ছেন.?
বড়ভাবীঃ ইনশাআল্লাহ কাল সকালে।
রিমাঃ কে নিয়ে যাবে.?
বড়ভাবীঃ ছোট ভাই সকালে আসবে। সে আসলেই কিছুক্ষন পর বের হয়ে যাবো। ব্যাগ আগেই ঘুছিয়ে রাখবো।
রিমাঃ বড় ভাইয়া কি যাবে নাকি আপনাদের বাড়ি.??
বড়ভাবী:জী। উনি বৃহ:স্পতিবার অফিস শেষ করে আমাদের বাড়ি যাবে শুক্রবার সকালে উনিসহ আমরা ফিরে আসবো।ছেলে দুইটাকেও উনি মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যাবেন। এমন টাই কথা হয়েছে।
রিমাঃ ও ভালো..
তারপর বড়ভাবি কাজের ফাঁকেফাঁকে রিমা কে কিভাবে কি করতে হবে তা বুঝিয়ে দেয়। নাস্তা তৈরি করে ঘরে আসে। অযু করতে করতেই আযান দিলে তারা মাগরিবের নামাজ আদায় করে সুরা অকিয়াহ তেলোয়াত করে নাস্তা করে। তারপর সবাই সবাইর রুমে যায়।রিমা রুমে গিয়ে বইয়ের বাকি অংশ পড়তে থাকে।এশার আযান দিলে নামাজ পড়ে সবাইকে ভাত বেড়ে দেয়। ভাত খাওয়ার পর সবাই সবাইর রুমে চলে যায়।রিমা প্লেট গুলো ধৌত করে গুছিয়ে রাখে। রুমে গিয়ে নিজেকে একটু পরিপাটি করে খালিদের জন্য অপেক্ষা করে।খালিদ আসলে ভাত খেয়ে গত রাতের মত আজকের রাত ও তারা অতিবাহিত করে। খালিদ আসার সময় রিমার জন্য ডেইরী মিল্ক চকলেট নিয়ে আসে।এতে রিমা খুব খুশি হয়। সকালে নামাজের পর নাস্তা বানানো শেষ হলে সবাই নাস্তা করে। রিমা তাদের কে বেড়ে দেয়। তাদের খাওয়া শেষ হলে রিমা খালিদ আর তার জন্য খাবার তাদের রুমে নিয়ে যায়। খাবার শেষে খালিদ কে রেডি করে দেয় এবং তার পারিশ্রমিক বুঝে নেয়।খালিদ দোকানে চলে যায়। রিমা খাবারের রুমে গিয়ে দেখে বড়ভাবি দুপুরের খাবারের তৈরীর জন্য সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রিমাঃ আরে ভাবি কি করছেন কি করছেন উঠুন উঠুন। কিছুক্ষন পর আপনার না ভাই আসবে। উঠুন আপনি গিয়ে গোসল করে ব্যাগ গুছিয়ে নিন।
বড়ভাবিঃ আমার ব্যাগ গুছানো আছে। শুধু গোছল করে নিলেই হবে। আপনি একা একা এত কাজ করতে পারবেন না। তাই কাজ গুলো একটু এগিয়ে দিচ্ছি।
রিমাঃ আমি ইনশাআল্লাহ সব পারবো। আপনি বরং গোসল করে নিন
বড়ভাবি উঠে গিয়ে গোসল সেরে নেয়। গোসল করার পর রুমে যেতে না যেতেই দরজার আওয়াজ আসে। বড়ভাবির ভাই চলে আসছে। দরজা খুলে দিয়ে ভাই বসতে বলে। তারপর ভাইয়ের জন্য নাস্তা নিয়ে আসে। নাস্তা করার পর প্লেট গুলো গুছিয়ে রেখে রুমে গিয়ে বোরকা, মুজা(হাতওপা)ও নিকাব পরিধান করে বড়ভাবি রুম থেকে বের হয়।প্রথমে রিমার থেকে বিদায় নেয় তারপর শশুর শাশুড়ি থেকে বিদায় নিয়ে বড়ভাবি গাড়ি করে চলে যায়। শাশুড়ি এসে রিমাকে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন পারামর্শ দেয়। দুপুরের খাবার রান্না হয়ে গেলে রিমা পাতিল গুলো খাবারের রুমে নিয়ে যায়।তারপর গোসল সেরে নেয়। গোসল করার পর আযান দিলে নামাজ আদায় করে নেয়। তারপর তার শশুর শাশুড়ি কে ভাত বেড়ে দেয়। তারা ভাত খেয়ে তাদের রুমে চলে যায়।কিছুক্ষন পর খালিদ আসলে তারা একসাথে খেতে বসে।
খালিদঃ আজকে আমার বউ টা রান্না করছে তাই না। দিন দিন তারাতরি লোকমা তুলে দিন। কেমন রান্না করেছেন তা দেখতে হবে নআ।
রিমা খালিদের মুখে খাবার মুখে তুলে দেয়।খালিদ তা খেয়ে নেয়।
রিমাঃ কেমন হয়েছে তা তো বললেন না.??
খালিদঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌ অনেক ভালো। দিন দিন আরো লোকমা তুলে দিন।
রিমাঃ আমার মুখে খাবার তুলে দিবেন না..?
খালিদঃ দিবো। আজকে যেহেতু আপনি রান্না করছেন। তাই আগে আমি পেট ভরে খেয়ে নিই।তারপর আপনার মুখে আমি খাবার তুলে দিবো।
রিমা আর কিছু না বলে খালিদের মুখে লোকমা তুলে দেয়।
খালিদঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌ আর খেতে পারবো না। দিন এবার মুখ মুছে দিন।
রিমা প্রথমে পানি নিয়ে হাত ধুয়ে খালিদের মুখ মুছে দেয় তারপর তার ওড়না দিয়ে পানি গুলো মুছে দেয়।
রিমাঃ দিন এবার আপনি আমার মুখে খাবার তুলে দিন।
খালিদ কিছুটা অপরাগ হয়ে রিমার মুখে এক লোকমা খাবার তুলে দেয়। সাথে সাথে রিমা তা বোন প্লেটে ফেলে দেয়।
রিমাঃ এই খাবার গুলো আপনারা কিভাবে খেলেন। এত লবণ আর ঝাল হয়েছে.??
খালিদঃ আসলে আমাদের অভ্যাস আছে।
রিমাঃ মানে.?
খালিদঃ বড়ভাবি মাঝে মাঝে রান্নায় ভুল করে কোথাও লবণ কিংবা ঝাল কম বেশি দিয়ে দিতেন। কিন্তু আমরা কখনো খাবারের ভুল ধরতাম না। এটা উচিত ও না। যিনি রান্না করেন তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে রান্না যেন ভালো হয়।কিন্তু ভুল হয়ে গেলে কিছু তো করার থাকেনা। তাই আমরা বড়ভাবি কে কখনো কিছু বলতাম না উনার কষ্টের কথা চিন্তা করে আমরাও কষ্ট করে খেয়ে নিতাম। তাই এতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।মূলত খাবারের দোষ ধরা উচিত না। আল্লাহ রিযিকে এটাই রাখছে এই নিয়ত করে খেয়ে ফেলি।
হঠাৎ রিমার মনে পড়ে গেল তার আপন মায়ের কথা। একদিন রান্নায় লবণ বেশি হওয়াতে তার বাবা তার মায়ের মুখে খাবার গুলো ছুড়ে মারে। সেও মাকে অনেক গুলো কথা শুনিয়ে দেয়।আর আজকে নিজের বেলায় পুরো বিপরিত দেখে কান্না করে দেয়।
খালিদঃ কান্না করছেন কেন.?
রিমাঃ একদিন আমার আম্মু খাবারে লবণ বেশি দিয়েছিল। ঐদিন আমি আর আব্বু আম্মুকে অনেক কথা শুনাইছিলাম।আর আজকে নিজের বেলায় দেখলাম আপনারা আমায় কিছু বলেন নি। কি সুন্দর করে করে খেয়ে নিলেন।তাই কান্না চলে আসলো।
খালিদঃ আমিও হোষ্টেলে দীর্ঘদিন রান্না করে খেয়েছি। রান্না করা অনেক কষ্টের তা আমরা খুব ভালো করেই জানি। তাই কখনো কারো খাবারের দোষ ধরিনা।যা দেয় তা খেয়ে শুকর আদায় করি।আচ্ছা আপনি এগুলো রেখে দিন।আমি বাজার থেকে তরকারি নিয়ে আসি।
রিমাঃ কেন..আপনারা যদি খেতে পারেন আমি কেন খেতে পারবো না।আমি এগুলোই খাবো।
খালিদ :পাগলামি করবেন না, পরে অসুস্থ হয়ে পড়বেন।আমরা জানি অভ্যস্ত ছিলাম তাই খেয়ে নিছি। আপনি পারবেন না খেতে।
রিমাঃ আমাকেও তো অভ্যস্ত হতে হবে তাই না.? আপনি খাবার মুখে তুলে ঠিকই খেতে পারবো।
খালিদ শেষ পর্যন্ত অপরাগ হয়ে রিমার মুখে খাবার তুলে দেয়। আর রিমা তা খুব স্বাভাবিক ভাবেই খেয়ে নেয়।
খাবার খাওয়া শেষ হলে খালিদ রিমার মুখ মুছে দেয় এবং দোকানে চলে যায়।
চলবে ইনশাআল্লাহ
শিক্ষা
★পরিবারের ভিতর যদি একে অপরকে সেক্রিফাইজ করে তখন ঐ পরিবার টা সবচেয়ে সুন্দর হয়।
★ প্রত্যেক পুরুষের উচিত ঘরে ফিরার সময় স্ত্রীর জন্য কিছু হাদিয়া নিয়ে আশা। অন্তত একটা চকলেট হলেও যেন নিয়ে আসে। এটা সুন্নত।এতে স্ত্রী ও খুব খুশি হয়।
★আপনার খেয়াল রাখা জরুরী যিনি আপনার জন্য ভাত রান্না করছে উনি আপনার দাসী নয়।উনি আপনার স্ত্রী ।উনি বড় অনুগ্রহ করেই আপনার জন্য ভাত রান্না করে। আর উনি চেষ্টা করে আপনার জন্য সর্বোচ্চ ভালো রান্না করতে। কিন্তু মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায়।তাই বলে উনার উপর ক্ষোভ দেখানো মারাত্মক অন্যায়। আমাদের উচিত খাবারের ভুল না ধরে সম্ভব হলে তা খেয়ে নেওয়া। আর সম্ভব না হলে না খাওয়া। তবে যিনি রান্নাকরে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করা মোটেও উচিত না। নবীজী (সাঃ) খাবারের দোষ ক্রুটি তালাশ করতেন না।
আবু হুরাইরা( রাঃ)থেকে বর্নিত,তিনি বলেন, রাসুল সাঃ কখনো খাবারের দোষ-ক্রটি তালাশ করেন নি।ভালো লাগলে তিনি তা খেতেন,আর ভালো না লাগল তা রেখে দিতেন।।(বুখারী -৫০১৫)

tag 


mizanur rahman azhari bangla waz all bangla waz 2018 mp3 bangla waz amir hamza hafizur rahman siddiki new waz 2018 bangla 2018 tarek monowar waz mahfil bangla 2018 bangla waz 2018 amir hamza bangla waz 2018 taheri tofazzal hossain full bangla waz 2018 new bd waz bangla abdullah al amin waz mahfil bangla 2017 khaled saifullah ayubi mizanur rahman azhari english waz bangla mp3 bangla waz 2017kolorober gojol badruzzaman kalarab kalarab tv holy tune gojol kalarab newainuddin al azad islamic bangla islamic salam kalarab kalarab shilpi gosthi new song 2017 kalarab allah allahmuhib khan 2018 allah boloabu rayhan 2018 holy tune record sabu rayhan islamic song kala movie ami dekhini tomay iqbal hj bangla islamic song 2017iqbal hossain jibon
kalarab new song 2018, kalarab new song, kalarab song, bangla islamic song, holy tune, kalarab shilpigosthi, kalarab tv, kalarab shilpi, kalarab new gojol, kalarab islamic song, kalarab live, kalarab shilpi gosthi new song, kalarab new islamic song, kalarab best song, kalarab bangla gojol, kalarab best gojol, kalarab bangla, kalarab bodruzzaman, kalarab by abu rayhan, kalarab new 2018, ???? ????????????, kalarab new song 2018 download, 2018 islamic song, waz


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios:

আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।