সুন্নত জিন্দার মিশন। পর্ব ১৫Md Abdul Kaiyum
মেহমানদের বিদায় দিয়ে ডেকারেশন ও বাবুর্চিদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি হাদিয়া দিয়ে খালিদ ঘরে আসে।ততক্ষণে আয়েশা চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
খালিদঃকিরে. এখনি বের হয়ে যাবি নাকি??
আয়েশাঃ জী.আব্বা(শশুর)নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
খালিদঃতোর ভাবি থেকে বিদায় নিছস.?
আয়েশাঃ না,এখনো নিই নাই।বাহির হওয়ার আগে ভাবির রুমে গিয়ে দেখা করে নিবো।
খালিদঃ আচ্ছা তুই দেখা করে আয়।আমি সামনের রুমে আছি।
আয়েশাঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
কিছুক্ষন পর আয়েশা রিমার রুমের সামনে গিয়ে
আয়েশাঃ আসসালামু আইলাইকুম।
রিমাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম। আপা... আসুন আসুন ভিতরে আসুন।
আয়েশাঃ ভাবী যাই দোয়া করবেন আমাদের জন্য।
(রিমাকে জড়িয়ে ধরে)
(রিমাকে জড়িয়ে ধরে)
রিমাঃ এত তারাতরি..? আরো কিছুক্ষন থাকলে হত না.??
আয়েশাঃ ভাবি.. আব্বা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।আমাকে তারাতরি যেতে হবে।
রিমাঃ ঠিক আছে ভাবি। আমাদের জন্যও দোয়া করবেন।
আয়েশাঃ এই নিন এটা আমাদের পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য হাদিয়া। (হযরত আসার সময় আনছিল)
রিমাঃ বারাকাল্লাহ ফিহ হায়াতী। আমি তো আপনাকে কিছুই দিতে পারিনি। আরো আপনি আমার জন্য কত কষ্ট করেছেন।
আয়েশা : আপনি নতুন মানুষ। আমাদের জন্য শুধু দোয়া করবেন।আর আমার ভালো ভাইটিকে দেখে রাখবেন। মেহেরবানী কখনো কষ্ট দিবেন না। এমনিতেই আমাদের এই সংসার পরিবর্তনে ভাইকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।
রিমাঃ কি যে বলেন আপা... নিজের বর কে কেউ কষ্ট দেয় নাকি। আর আমি অধম হয়েও আপনার ভাইয়ের মত এত ভালো ছেলেকে বর হিসেবে পেয়েছি এটা নিঃসন্দেহে মাওলার পক্ষ থেকে এক বড় নেয়ামত। আমি সর্বোচ্ছ চেষ্টা দিয়ে আপনার ভাইকে ভালো রাখার চেষ্টা করবো।ইনশাআল্লাহ।
আয়েশাঃ আপনাকে নিশ্চয় ভাই বলেছে যে, ভাই সমাজে সুন্নত জিন্দার মিশনে নেমেছে।কাজ ও শুরু করে দিয়েছে। ভাইয়ের পাশে আপনি থাকবেন তো.??
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ আপা.. সব সময় উনার পাশে উনি আমাকে পাবে।
আয়েশাঃ ঠিক আছে তাহলে আমি যাই। ইনশাআল্লাহ আবার দেখা হবে। আসসালামু আলআলাইকুম।
রিমাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম,
আয়েশা রিমার থেকে বিদায় নিয়ে তারপর বড়ভাবি থেকে বিদায় নেয় তারপর তার মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে সামনের রুমে আসে।সেখানে খালিদ খালিদের বাবা,শশুর কাসিম, রিমার ছোট ভাই আর হযরত বিভিন্ন কথা বলতাছে।আয়েশা সামনের রুমে আসলে
হযরত:আচ্ছা মামা আজ তাহলে যাই বেচে থাকলে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম ( খালিদের শশুরের উদ্দেশ্য করে)
তারপর খালিদ কাসিম ও তাদের বাবা হযরতদের রাস্তা পর্যন্ত এগিয়ে দেন।সেখানে আয়েশার বর খালিদ কাসিম ওতার শশুরের সাথে মুসাফাহ ও মোয়ানাকা করে। খালিদ তাদের গাড়িতে তুলে দেয়।সবাই ঘরে ফিরে আসে।
রিমার বাবাঃ খালিদ.. এবার তো আমাদের ও উঠতে হবে। তো বাবা তোমরাও চলো আমাদের সাথে.??
খালিদঃ এখব...? আচ্ছা আমি আব্বু আম্মুর সাথে পরামর্শ করে নি।তারপর দেখা যাক। কি করা যায়।
রিমার বাবাঃ ঠিক আছে বাবা।
খালিদ তার বাবার রুমে যায় সেখানে গিয়ে তার বাবা মা ও কাসিমের সাথে পরামর্শ করে।তারা কেউ কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা। কি করা যায়।
একদিকে খালিদ টানা কাজ করাতে একটু ক্লান্ত সাথে বাড়িতে আরো কিছু কিছু কাজ বাকি আছে আবার অন্য দিকে রিমারও হয় হয়তো বাড়ি যাওয়ার জন্য বসে আসে। এসময় সব মেয়েই বাড়ি যেতে চাই। তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। কি করা যায়। পরে কাসিম বলল
কাসিমঃ আচ্ছা খালিদ তুই বর রিমার সাথে কথা বল। সে যদি যেতে রাজি হয় তাহলে তুই যা। আমি না হয় এগুলো দেখবো।
খালিদঃ আপনি অফিসে ফিরে যাবেন কখন।
কাসিমঃ ছুটি তো আনছি ১দিনের কাল ভোর বেলা বের হয়ে অসিফ করার ইচ্ছে আছে।
খালিদঃ তাহলে একরাতে এত কাজ কিভাবে করবেন।আবার সকালে জার্নি আবার আফিস। না ভাই এটা সম্ভব না।
কাসিমঃ আচ্ছা সম্ভব অসম্ভব সেটা আমি দেখছি।তুই বরং রিমার সাথে আলাপ কর। সে কি বলে আগে দেখ।
খালিদঃ আচ্ছা...
খালিদ সেখান থেকে গিয়ে তাদের রুমে যায়। রিমা বসে বসে তার ছোট ভাইয়ের কথা বলে।
খালিদঃ আসসালামু আইলাইকুম।
রিমাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম।
খালিদঃ আপনার সাথে একটা পরামর্শ ছিল.??
রিমাঃ ভাই তুই বরং আব্বুর কাছে যা।আমি আসতেছি।(ছোট ভাইকে উদ্দেশ্য করে).. জী বলুন??
খালিদঃআব্বা বলছিল উনার সাথে আপনাদের বাড়ি যেতে। এখন বাড়িতে কিছু কাজও ছিল। তাই বাড়ির সবাই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। এখন আপনি কি বলেন। আজ না গেলে হয় না......
রিমাঃ আরে বাড়িতে এখনো অনেক কাজ. তাছাড়া আপনি অনেক ক্লান্ত। এখন কিভাবে যাই।আমি তো আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ যাবো না।
খালিদঃ কিন্তু আপনার মন খারাপ করছে না..?
রিমাঃ মন খারাপ হলেও সমস্যা নাই।আমার বরের জন্য আমি না হয় সেক্রিফাইজ করলাম।
খালিদঃ জাযাকুমুল্লাহ।
রিমাঃ ইয়াওয়্যাকি। আচ্ছা চলুন।আব্বুর সাথে আমি কথা বলছি।
তারপর তারা সামনের রুমে যায়।
রিমাঃ আসসালামু আইলাইকুম।
রিমার বাবা:ওয়ালাইকুমুসসালাম
রিমাঃ বাবা.. আজ না গেলে হয় না।আপনাদের জামাই আজ কয় দিন অনেক ব্যস্ত ছিল। উনার একটু রেষ্ট এর দরকার আছে। আমরা না হয় আরো ২দিন পর যাই.?
রিমার বাবাঃ ঠিক আছে মা.. তোদের যেভাবে ভালো হয়।তোর মা বলছিলো যে আশার সময় তোদের নিয়ে যাওয়ার জন্য তাই আমি বলছিলাম।
রিমাঃ আচ্ছা আমি না হয় আম্মুর সাথে ফোনে কথা বলব।
রিমার বাবাঃ আচ্ছা মা তাহলে আমরা আজ উঠি। তোর শশুর কোথায়।
খালিদঃ বাবা.. নামাজের সময় হয়ে গেছে। নামাজ পড়ে এসে চা খেয়ে তারপর না হয় যাবেন।
রিমাঃ হুম বাবা.. আপনি নামাজ পড়ে আসেন। আমি চা এর ব্যবস্থা করছি।
তারপর তারা নামাজ পড়তে গেলো, নামাজ পড়ে আসলে তাদের সবাইকে চা ও হালকা নাস্তা দেওয়া হল। তারপর সবাইর থেকে বিদায় নিয়ে খালিদ তাদের গাড়িতে তুলে দেয়।
চলবে ইনশাআল্লাহ
শিক্ষা
★ শ্রমিকের নায্য মুল্য সময় মত পরিশোধ করতে হবে। হাদিসে শ্রমিকের ঘাম শুকানোরর আগে তার ন্যায্য মূল্য পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অথচ আমাদের দেশে শ্রমিকের ঘা শুকিয়ে যায় কিন্তু তার ন্যায্য মুল্য সে পায় না। এটা মোটেও উচিত নয়। তাদের মনে কখনো আঘাত দেওয়া যাবে না। আপনি যদি নেকীর উদ্দেশ্যে ৫০০জন গরীব মিসকিন কে একবেলা ভাত খাওয়ান।কিন্তু বাবুর্চির ন্যায্য মূল্য না দেন তাহলে মনে রাখবেন আপনার ঐ ৫০০ জন গরীর মিসকিনকে খাওয়ানো কোন লাভ হয় নি। বরং বাবুর্চির মনে কষ্ট দেওয়ার কারনে আপনি কেয়ামতে ধরা খেয়ে যেতে পারেন।
পারলে তাদের কিছু হাদিয়া দিন।
★(বোনদের জন্য) সেক্রিফাইজ করার অভ্যাস করুন।আপনার স্বামির শারিরিক, মানষিক, আর্থিক সব কিছু বিবেচনা করে যে কোন সিদ্ধান্ত নিন।
পারলে তাদের কিছু হাদিয়া দিন।
★(বোনদের জন্য) সেক্রিফাইজ করার অভ্যাস করুন।আপনার স্বামির শারিরিক, মানষিক, আর্থিক সব কিছু বিবেচনা করে যে কোন সিদ্ধান্ত নিন।
ইনশাআল্লাহ ধারাবাহিক ভাবে আরো কয়েক পর্ব করার ইচ্ছে আছে। আপনাদের কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যাই জানাবেন। কারো যদি মনে হয় কোন টপিক (সুন্নতের আমল) যে এই গল্পের সাথে মানাবে তাহলে অবশ্যই জানাবেন।ইনশাআল্লাহ এড করার চেষ্টা করবো। দোয়ার মোহতাজ।
tag
0 coment rios:
আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।