সুন্নত জিন্দার মিশন। পর্ব ১৩
Md Abdul Kaiyum
খাবার শেষ করে রিমা ও খালিদ তাদের রুমে চলে যায়। রিমা বিচানা ঝেড়ে মশারি লাগিয়ে দেয়।তারপর খালিদ আর রিমা অযু করে খাটে শুয়ে পড়ে।
খালিদঃ বিকালবেলা প্যাড গুলো পেয়েছেন?
রিমাঃ হুম।কখন এনে রেখে গেলেন?আমাকে তো জানান নি?
খালিদঃ ৩টার দিকে।আপনি ঘুমে ছিলেন তাই আর ডাকি নি।
রিমাঃ আমিতো বলছিলাম রাতে আনলেও হতো এত কষ্ট করে একবার এসে আবার গেলেন।
খালিদঃ আমার বউয়ের জন্যই তো আনছি। বউয়ের জন্য যদি সামান্য কষ্ট না করতে পারি তাহলে কিসের আর বর হলাম।
রিমাঃ আপনি আমায় খুব ভালোবাসেন তাই না.??
খালিদঃ প্রত্যেক স্বামীদের উচিৎ তার বউ কে ভালোবাসা। আচ্ছা বলুন তো..?
আমার শারিরিক তৃপ্তি কে দিবে.?? নিশ্চয় বউ।
আমার শারিরিক তৃপ্তি কে দিবে.?? নিশ্চয় বউ।
আমার মানুষিক শান্তি কে দিবে..?তাও বউ।
আমার জ্বর হলে জল পট্টি কে দিবে.? আমার বউ।
আমার মাথা ব্যাথা করলে আমার মাথা টিপে দিবে কে..? আমার বউ।
রাতে হঠাৎ আমি আসুস্থ হয়ে গেলে আমার জন্য পেরেশান হয়ে যাবে কে.?? আমার বউ।
আমার মা বাবা কে দেখে রাখবে কে.? আমার বউ।
আমার সন্তানদের দেখাশুনা করবে কে? আমার বউ।
তো.. আমার জীবনের প্রতিটা সুখ দুঃখের ভাগ যদি আমার বউ নেয়। তাহলে আমি কেন তাকে ভালোবাসবো না। বলতে পারেন.?? আমি আপনাকে সত্যি খুব ভালোবাসি। আর কেনই বা বাসবোনা আপনি না আমার ইহকাল ও পরকালের সাথী।আমি আপনাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি।
রিমাঃ আমিও আপনাকে খুব ভালবাসি। I love you.
খালিদঃ I love you too.
রিমাঃ সারাদিন অনেক পরিশ্রম করছেন এখন একটু ঘুমান।
খালিদঃ আচ্ছা একটা কথা বলুন তো.??
রিমাঃ কি.??
খালিদঃ দুপুরবেলা দেখছিলাম আপনি উপর হয়ে ঘুমিয়ে আছেন।আপনি কি সবসময় ঐভাবেই ঘুমান.?
রিমাঃ না.. মানে.... আসলে আমি ঐ ভাবে ঘুমাতে অভ্যস্ত।
খালিদঃ ইন্নালিল্লাহ... কি যে বলেন.. উপর হয়ে শোয়া তো জাহান্নামীদের শয়ন পদ্ধতি।
রিমাঃ আমি ছোট বেলা থেকে এইভাবেই ঘুমাতে যে অভ্যস্থ।
খালিদঃ অভ্যস্থ বললে তো হবে না. বদঅভ্যাস ত্যাগ করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
রিমাঃ ইনশাআল্লাহ। তাহলে আমি এখন কিভাবে ঘুমাবো.??
খালিদঃ ডান কাত হয়ে ঘুমানো সুন্নত।
রিমাঃ আচ্ছা আজ থেকে ডান কাত হয়ে ঘুমাবো ইনশাআল্লাহ।
তারপর তারা ঘুমিয়ে যায়। মুয়াজ্জিনের আল্লাহু আকবরের আওয়াজে খালিদের ঘুম ভেংগে যায়। লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। তারাতরি দোয়া পড়ে নেয়। তার লাফ দেওয়ার কারনে রিমার ও ঘুম ভেংগে যায়।
রিমাঃ কি হয়েছে আপনার.???
খালিদঃ না তেমন কিচ্ছু হয় নাই।
রিমাঃ তাহলে এভাবে লাফ দিয়ে উঠলেন যে.??
খালিদঃ আযান দিয়া দিছে??
রিমাঃ হুম, তাতে বুঝি লাফ দেওয়া লাগে?
খালিদঃ আরে আজকে তাহাজ্জুদ মিস হয়ে গেলো.?
এর কারন কি.? আমার তো তাহাজ্জুদ মিস হয় না??
এর কারন কি.? আমার তো তাহাজ্জুদ মিস হয় না??
রিমাঃ আরে গতকাল সারাদিন অনেক পরিশ্রম করছেন।শরীর অনেক দুর্বল। তাই হয়তো সজাগ হয় নি।
খালিদ অন্য খেয়ালে আছে। সে কালকের সারাদিনের কথা চিন্তা করতাছে।
রিমাঃ এই যে.. কি ভাবতাছেন??
খালিদঃ না, ভাবতাছি গতকাল কোন গুনাহ করে ফেললাম নাকি.?? শুনছি গুনাহ করলে মানুষ নেকের কাজ করতে পারে না.? কাল কি কোনগুনাহ করে ফেলছি.?? যার কারনে আমার তাহাজ্জুদ মিস হলো.??
রিমা কি বললে বুঝতে পারছেনা।তারপরেও খালিদ কে সান্তনা দেওয়ার জন্য বলে
রিমাঃ আরে গতকাল অনেক প্ররিশ্রম করেছেন।শরীর দুর্বল তাই হয়তো।আর আপনি তো ইচ্ছা করে কোন গুনাহ করতেই পারেন না।আপনার প্রতি আমার এই বিশ্বাস আছে।
খালিদঃ গতকাল অনেকের কাছে বাজার করছি। না জানি কারো মনে কষ্ট দিয়ে আসলাম নাকি। আল্লাহ মাফ করে দিয়েন(আবেগে আফ্লুত হয়ে)
রিমাঃকারো মনে কষ্ট যাবে এমন কাজ আপনি করবেন না,আমি জানি। আপনি বরং অযু করে নামাজ পড়তে যান। আমি ও অযু করে নিই।
খালিদ ইস্তেগফার পড়তে পড়তে মেসওয়াক নিয়ে অযু করতে যায়। অযু করে এসে ২রাকাত নামাজ সুন্নত পড়ে মসজিদে রওনা হয়।
চলবে ইনশাআল্লাহ
শিক্ষা
১) কেউ ঘুমে থাকলে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তাকে না জাগানো উচিত।
২)ঘুমের অন্যান্য সুন্নত সমুহ
২)ঘুমের অন্যান্য সুন্নত সমুহ
★অযূ করে শোয়া
★বিছানা ঝাড় দেয়া
★আয়তাল কুরসি পড়া
★সৃুরা ইখলাস,নাস ও ফালাক ((প্রতি সূরা ৩বার)) পড়ে দুহাতে ফু দিয়ে যতটুকু সম্ভব হাত,মুখ ও শরীর মাসেহ করা
★সূরা মূলক পাঠ করা((দেখে দেখে পড়া যাবে))
কমপক্ষে কুরআনের ১০০ আয়াত পড়া ((সবগুলো মিলিয়ে))
★তাসবীহ পড়া
★ঘুমের দোয়া পড়া
★ডানকাত হয়ে শোয়া....
★বিছানা ঝাড় দেয়া
★আয়তাল কুরসি পড়া
★সৃুরা ইখলাস,নাস ও ফালাক ((প্রতি সূরা ৩বার)) পড়ে দুহাতে ফু দিয়ে যতটুকু সম্ভব হাত,মুখ ও শরীর মাসেহ করা
★সূরা মূলক পাঠ করা((দেখে দেখে পড়া যাবে))
কমপক্ষে কুরআনের ১০০ আয়াত পড়া ((সবগুলো মিলিয়ে))
★তাসবীহ পড়া
★ঘুমের দোয়া পড়া
★ডানকাত হয়ে শোয়া....
৩)আপনার শারিরিক, মানুষিক সকল সেক্টরে সবার আগে আপনি যাকে পাবেন।সে হলো আপনার স্ত্রী। তাই তাকে অবশ্যাই নিজের সর্বোচ্চ পর্যন্ত ভালোবাসুন।
৪)অনেকে নিয়ত করে নামাজ পড়ার জন্য। কিন্তু তারপরেও পারেনা। যারা এই ধরনের ভুক্তভোগী তাদের উদ্দেশ্যে বলি আপনি একটু চিন্তা করুন আজ মাওলার কতগুলো নাফরমানি করেছেন। আপনি যত গুনাহ ছাড়তে পারবেন তত নেক আমল করতে পারবেন।
৫)বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়ার অভ্যাস করুন।
৬) ওযু করার পর ২ রাকাত তাইয়াতুল ওযু নামাজ পড়ার অভ্যাস গড়ুন।মনে রাখবেন হযরতে বিলাল রাঃ দামি হওয়ার পিছনে অনেকগুলো আমলের মধ্যে একটি আমল ছিল তাইয়াতুল ওযু।
৭) নবীজী (সঃ) ঘরকে কবর বানাতে নিষেধ মরেছেন। তাই সুন্নত নফল নামাজ ঘরে পড়ার অভ্যাস করুন।
৮) প্রত্যেকের উচিত ঘরে আলাদা ইবাদতের জন্য ব্যবস্থা করা। না পারলে নিজের রুম ব্যবহার করা যেতে পারে।এতে পবিত্রতার দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
৯) ঘরে সুন্নত নামাজ পড়ার পর যদি সময় থাকে তাহলে একটু বিশ্রাম নেওয় বা পরিবারের সাথে কিছু সময় কথা বলাও সুন্নত।
শরিয়াহ পরিপন্থী কাজ
১)উপর হয়ে শোয়া মারাত্মক গুনাহের কাজ।ইবনে মাজাহ শরিফে আসছে।উপর হয়ে জাহান্নামিরা ঘুমায়।আমরা অনেকে রাতে উপর হয়ে ফেইজবুক চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়ি।যা মোটেও উচিত না।এটা আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে।
২) অনেকে মনে করেন বউকে মনে হয় টাইটের উপর রাখলে ভালো হয়। কিংবা অনেক বন্ধু অপর বন্ধু কে পরামর্শ দেয় যে, ভুলেও ভাবি কে হস (ছাড়) দিবি না
সবসময় টাইটের উপর রাখবি।মনে রাখবেন আপনি যদি এই আমলের উপর ইস্তেকামাত থাকেন।তাহলে ধরে নিন অল্প কয়েকদিনের ভিতর সংসারে ভাংগন ধরবে।রশি যত পাকাপোক্ত হোক না কেন, তা অতিরিক্ত চাপের কারনে একদিন ছিড়ে যাবে।এসব টাইট আর চাপাচাপি বাদ দিয়ে ভালোবাসা পূর্ণ সংসার করার চিন্তা করুন।
সবসময় টাইটের উপর রাখবি।মনে রাখবেন আপনি যদি এই আমলের উপর ইস্তেকামাত থাকেন।তাহলে ধরে নিন অল্প কয়েকদিনের ভিতর সংসারে ভাংগন ধরবে।রশি যত পাকাপোক্ত হোক না কেন, তা অতিরিক্ত চাপের কারনে একদিন ছিড়ে যাবে।এসব টাইট আর চাপাচাপি বাদ দিয়ে ভালোবাসা পূর্ণ সংসার করার চিন্তা করুন।
tag
0 coment rios:
আপনার একটি গুরুত্বপূন্য কমেন্ট লেখককে অনুপ্রানিত করে । অনুগ্রহ করে আপনার অনুভুতি আমাদেরকে জানান । আশা করি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো ।